‘সরকার কিছুই করল না’

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ০৬:৪০ পিএম

‘আমার নাতিনের এতো বড় অসুখ, অনেক দামি দামি ওষুধ লাগতাসে আমি কিছুই করতে পারতাছি না। মানুষের ধারে হাত পাতি যে টাকা পাই তা দিয়া ওষুধ আনি, সরকার কিছুই করল না আমার নাতিনের লাইজ্ঞা।’

বিডি২৪লাইভের প্রতিনিধির কাছে এ ভাবেই কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন মুসকান আক্তার সুমনার দাদী হালিমা বেগম (৫৫)।

তিনি বলেন, ‘আমি অনেক বড় আশা করে আমার নাতিনরে নিয়ে এইখানে আসছি কিন্তু আমি কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। ডাক্তাররা অপারেশন করছে। তবে কোন উন্নতি হয় নাই। অনেক দামি দামি ওষুধের নাম লিখে দিয়েছে ডাক্তাররা। আমার কাছে টাকা থাকে না। তখন আমি আমার নাতির ওষুধের স্লিপ নিয়া রাস্তায় রাস্তায় মানুষের কাছে টাকা চাই। কিছু টাকা হলে, আমি ওই ওষুধ কিনে নিয়ে এসে নাতিনরে খাওয়াই।’

বিরল রোগে আক্রান্ত নারায়াণগঞ্জের শিশু সুমনা গত ১৩ই আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়। এরআগে সুমনার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করে তার দাদী কিন্তু কোন কাজে আসেনি।

মুসকান আক্তার সুমনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান সমন্বয়ক ডাক্তার সামান্তলাল সেন বিডি২৪লাইভকে জানান, সুমনার অবস্থা ভালো না। সুমনা মুক্তা মনির মতো 'লিমফেটিক ম্যালফরমেশন' রোগে আক্রান্ত। সুমানার অবস্থা মুক্তা মনির চেয়ে জটিল। সরকার থেকে কোন সহযোগিতা পাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।

অপারেশন করার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুমনা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটের আইসিউর ২ নম্বর বেডে অনেকগুলো কাঁথা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। একটু পর পর কেঁপে উঠছে।

সুমনার দাদী হালিমা বেগম আকুতি করে বলেন, ‘সরকার না দেখলেও আমাদের দেশে অনেক বিত্তবান লোক আছে। যদি সবাই একটু একটু করেও সহযোগিতা করে আমার নাতিনকে, তাহলে আমার নাতিন বেঁচে যেত। সুচিকিৎসার অভাবে যাতে আমার নাতিন মারা না যায়। আমি সবার কাছে হাত জোর করছি আমার নাতিনকে একটু সহযোগিতা করুন।’

নারায়ণগঞ্জের সোনার বাংলা স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা। ১০ বছর বয়স থেকে সুমনার ডান হাতে টিউমার দেখা দেয়। ধীরে ধীরে তা বেড়ে গিয়ে বুকেও ছড়িয়ে পরে। সুমনা খুব ভালো ছাত্রী বলে জানান তার দাদী। তবে সুমনা ডান হাতে টিউমার থাকায়, বাম হাতে লিখে।

বিডি২৪লাইভ/এনএসএস/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: