‘৫০০ জনের হিটলিস্ট, ছাড় পাবে না কেউ’

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৮, ০৯:০৫ এএম

দেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের বিষ ছড়াচ্ছে ১৮ হাজার কারবারি। পুলিশের বিশেষ শাখার (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) করা তালিকাসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দুমাস আগে থেকেই কাজ করছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তার নির্দেশে সব গোয়েন্দা সংস্থা মাদক কারবারি ও তাদের পৃষ্ঠপোষক-গডফাদারদের তালিকা তৈরি করে। পৃথক সেসব তালিকা পাওয়ার পর সেগুলোর সমন্বয়ে নতুন একটি তালিকা করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সমন্বিত ওই তালিকার ভিত্তিতে সারাদেশের প্রায় ৫০০ মাদক কারবারির একটি হিটলিস্ট তৈরি করা হয়েছে।

মাদকের বিস্তাররোধে করা ৫০০ জনের হিটলিস্ট করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই লিস্টে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের নামও রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘হিটলিস্টে যাদের নাম রয়েছে, তাদের কারো ছাড় নেই। প্রত্যেককেই কঠোর পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।’

সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জমা দেওয়া তালিকার কোনওটিতে সাড়ে ৩ হাজার, কোনোটিতে এক হাজার আবার কোনোটিতে প্রায় ২ হাজার মাদক কারবারির নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এর মধ্যে অনেক মাদক কারবারির নাম একাধিক সংস্থার তালিকায় পাওয়া গেছে। এমন প্রায় ৫০০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রণয়ন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই তালিকা ধরেই বর্তমানে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের মাদকবিরোধী অভিযান চলছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

অন্যদিকে পুলিশের বিশেষ শাখা ২টি তালিকা তৈরি করেছে। একটি তালিকায় ১৯৬৮ মাদক কারবারির নাম রয়েছে। আরেকটি তালিকায় রয়েছে ১৮ হাজার নাম। ওই তালিকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, এলাকাভিত্তিক মাদক ডিলার, গডফাদার ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের নামও রয়েছে। তালিকা ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযান শুরু করে র‌্যাব। পরে তাদের দেখাদেখি বিশেষ অভিযান শুরু করে পুলিশও। গতকাল পর্যন্ত ৭ দিনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৩৩ জন নিহত হয়েছে।

পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আমাদের সময়কে বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে। পুলিশের কেউ মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, সারাদেশে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক, বিশেষ করে ইয়াবা। শহর তো বটেই, প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে মরণঘাতী এই বড়ির নেশা। এ নিয়ে অবৈধ কারবারের জালে পা ফেলছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে মন্ত্রণালয়ে যে হালনাগাদ তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে দেখা গেছে, মাদকের কারবারে ও এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় সব পেশার মানুষই জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি মাদক নির্মূলের সঙ্গে জড়িত বাহিনীর সদস্যদের নামও আছে তালিকায়। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

এদিকে ক্ষুদ্র মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য সকল জেলার পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাদক কারবারিদের তাৎক্ষণিক সাজা যেন দেওয়া যায়। এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারদেরও বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার এক কর্মকর্তা বলেছেন, মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে সারাদেশে মাদকের এক ভয়াবহ চিত্র পেয়েছেন তারা।


বিডি২৪লাইভ/এমআরএম

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: