‘ফেসবুক পুলিশ’
ফেসবুকে সারা দুনিয়ার নানা অংশ থেকে কে কি পোস্ট করছে - তার ওপর নজরদারি করছে কারা?
ফেসবুকে পোস্ট করা কোন জিনিস আপনি আপত্তিকর বা বীভৎস বলে মনে করলে তা আপনি রিপোর্ট করতে পারেন - তখন কর্তৃপক্ষ তা যাচাই করে মুছে দেয়।
কিন্তু এ কাজটা হয় কোথায়, আর কারা করেন এ কাজ?
'প্রতিদিন আমাদের দেখতে হয়, এমন সব জিনিস যা আমাদের আতংকিত করে, স্তম্ভিত করে। মানুষের শিরশ্ছেদ, শিশুদের নিয়ে তৈরি পর্নোগ্রাফি, প্রাণীদের ওপর অত্যাচার - এরকম নানা কিছু" - বলছিলেন এরকমই একজন নাম প্রকাশ না করা 'ফেসবুক পুলিশ'।
ধরা যাক, তার নাম লরা। তিনি বলছিলেন - "আমরা এখন একটা যন্ত্রের মতো হয়ে গেছি। এক ক্লিকে এসব ছবি বা ভিডিও দেখি - আরেক ক্লিকে সিদ্ধান্ত নেই, এটা থাকবে না মুছে দেয়া হবে।"
যারা এই নজরদারির কাজ করেন তাদের প্রতিদিন হাজার হাজার ভিডিও বা ফটো দেখতে হয়।
সবচেয়ে খারাপ জিনিস আপনি কি দেখেছেন? প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে।
"শিশু পর্নোগ্রাফি। আমি এমন ভিডিও দেখেছি যে ছয় মাস বয়েসের শিশুকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া আছে সন্ত্রাসবাদ - অত্যন্ত নৃশংস, রক্তাক্ত সব দৃশ্য। "
এই 'ফেসবুক পুলিশ'দের একটি অফিস আছে জার্মানির বার্লিন শহরে। অবশ্য বার্লিনের ঠিক কোন জায়গায় তা প্রকাশ করা হয় না।
তাদের প্রতিদিন এমন সব জিনিস দেখতে হয় যা দেখা খুব কঠিন। কিন্তু তাদের কাজের লক্ষ্য এটাই - যাতে ওই সব ভয়াবহ পোস্ট অন্যদের দৃষ্টির আড়ালে থাকে।
"আমার মনে আছে আমি কেঁদেছি, এ নিয়ে দু:স্বপ্ন দেখেছি। এটা ফেসবুকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ - কিন্তু আমাদের এগুলো দেখার পর মনের ওপর কি প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে কেউ ভাবে না" - বলেন লরা।
ফেসবুকের কর্মকর্তা মনিকা বিকার্ট অবশ্য বলেন, তারা বোঝেন যে এসবব জিনিস যাদের দেখতে হয় তাদের জন্য কাজটা কঠিন, কিন্তু এর বিরূপ প্রভাব যাতে না পড়ে সেজন্য তারা পদক্ষেপ নেয়াকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন।
ফেসবুকের কথায়, তাদের মানসিক সহায়তা দেবার জন্য সার্বক্ষণিক সুযোগ রাখা আছে।
সম্প্রতি কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা নামে একটি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে বলে জানাজানির পর তা এক বড় কেলেংকারিতে পরিণত হয়। এ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে। তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রশ্নেরও জবাব দেবেন।
ফেসবুক এখন বহু নতুন লোক নিতে শুরু করেছে যাদের কাজ হবে এখানে লোকে কি পোস্ট করছে তার ওপর নজরদারি করা - প্রয়োজনে খারাপ কনটেন্ট মুছে দেয়া।
ফেসবুক বলছে, বর্তমানে এ কাজ করছে ১৫ হাজার লোক - যা শিগগীরই বাড়িয়ে ২০ হাজারে উন্নীত করা হবে।
এরা অনেকেই ফেসবুকের ফুলটাইম কর্মী নন। অনেক সময় এ কাজ করার জন্য অন্য প্রতিষ্ঠানকে ঠিকেদারি দেয়া হয়েছে, এবং এই ফেসবুক পুলিশরা কাজ করছেন সেই সব ঠিকেদার প্রতিষ্ঠানের হয়ে। প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।
বিবিসির বাংলার ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে ফেসবুকের কর্মীরা সমাজের কোন শ্রেণী থেকে আসা তার ওপর এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, অধিকাংশই শ্বেতাঙ্গ বা এশিয়ান।
আর ফেসবুকের জন্য কাজ করছে এমন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের মধ্যে সমাজের সব অংশের প্রতিনিধিত্ব আছে কিনা তার তথ্য এখনো পাওয়া যায় না।
এখানে যাতে সমাজের সব অংশের প্রতিনিধিত্ব থাকে তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন ধরণের অধিকারকর্মীদের গ্রুপ কাজ করছে।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: