আসছে ঈদ বাড়ছে চোরের আনাগোনা! 

প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন ক্যাম্পাসে বেড়েই চলছে চোরের আনাগোনা। রীতিমতো চোর আতঙ্কে রয়েছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। 

দিনে অথবা রাতে বিশেষ কায়দায় সুযোগ মত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বন্ধ দোকানের গ্রিল কেটে মালপত্র, টাকা পয়সা চুরি করে দোকানদারদের সর্বশান্ত করছে। দিনে দুপুড়ে তালা ভেঙ্গে প্রধান প্রবেশ গেটসহ অন্যান্য জায়গা থেকে নিয়মিত সাইকেল চুরি, আবাসিক হল কক্ষ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ, মানিব্যাগ, চার্জার, ব্যাটারিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরির ঘটনা দিনদিন বেড়েই চলেছে। 

ঈদের ছুটিতে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে সন্ধ্যা নামলেই চোরের উৎপাত আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে মধ্য রাতে হল কক্ষ থেকে সাইকেল, মোবাইল, ল্যাপটপ চুরি এখন নিত্যদিনের ঘটনা। 

সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এক চোরকে হাতেনাতে ধরে মুচলেকা দিয়ে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। এদিকে চোরের উৎপাতে নিরাপত্তা আতঙ্কের পাশাপাশি জীবন হুমকির আশংকায় আছেন শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দাবি প্রশাসনের সুষ্ঠু নজরদারি আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে একের পর এক চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের টার্রজান পয়েন্ট এলাকা থেকে দুটি দোকানের তালা ভেঙ্গে মালপত্র এবং মোটা অঙ্কের টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও টার্রজান পয়েন্ট ও পরিবহণ চত্তরসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্যান্য দোকানে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেছে। 

কয়েকবার নিরাপত্তা শাখায় জানানোর পরেও তেমন কোন সাড়া মিলেনি বলে দাবি করছেন দোকানদাররা। গত মার্চ মাসে প্রধান প্রবেশ গেট থেকে শিক্ষার্থীদের একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও আবাসিক হলগুলোতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত নিয়মিত সাইকেল, মোবাইল, ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। 

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হল, মওলানা ভাসানী হল, মীর মশাররফ হোসেন হল, শহীদ সালাম বরকত হল, প্রীতিলতা হল, জাহানারা ইমাম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং শহীদ রফিক-জব্বার হল থেকে অত্যন্ত ৫০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে যার বেশিরভাগই মোবাইল, ল্যাপটপ, সাইকেল এবং টাকার ব্যাগ চুরির মতো ঘটনা।

&dquote;&dquote;

শুধু আবাসিক হলেই নয় বিভিন্ন বিভাগের সামনে থেকে বিদ্যুতের তার, ব্রডব্যান্ড সংযোগের লাইন, পানির পাম্প, চুরির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সেই সাথে ক্যাম্পাসে যত্রতত্র ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রশাসনের সামনেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলছে কিন্তু নেই কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ বলে দাবি করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মোবাইল, ল্যাপটপ এবং সাইকেল চুরি গেছে এমন একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। হলের সামনে নিরাপত্তা কর্মী থাকা সত্তেও কিভাবে হল থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ চুরি হয়। গার্ড কি বসে বসে ঘুমায় নাকি। 

নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, আমরা আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বদা সজাগ রয়েছি। কোথাও কোন ঘটনা ঘটার আভাস পেলেই দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিবো।

এসব বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আবু বকর সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রয়েছে। প্রায় বিভিন্ন হলে চুরির ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। ঈদ উপলক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। ক্যাম্পাসের সব জায়গায় গার্ড রয়েছে। গার্ড থাকা সত্তেও কিভাবে প্রায়ই চুরি হচ্ছে তা আমি খতিয়ে দেখবো। হলে চুরি ঠেকাতে হল প্রশাসনের সাথে কথা বলবো। 


বিডি২৪লাইভ/এমআরএম

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: