স্বামী পঙ্গু বেকার, কিন্তু স্ত্রী চলেন এসি-বাস আর বিমানে!
স্বামী ছুরত আলম (৪০) পেশায় রং মিস্ত্রী। বর্তমানে এক প্রকার পঙ্গু অবস্থায় রয়েছেন। কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই আয় রোজগার বলতে গেলেও শূন্যের কোঠায়। তবুও স্ত্রী আনোয়ারা বেগম যাতায়াত করেন এসি-বাসে নতুবা বিমানে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার-ঢাকা প্রায়শ যাতায়াত করেন আনোয়ারা।
আনোয়ারার এরকম বিলাসবহুল যাতায়াতের রহস্য আবারো উদঘাটন হয়েছে গতকাল শনিবার কক্সবাজার বিমান বন্দরে ধরা পড়ার পর।
এ যাত্রায় পাওয়া গেছে তার কাছে ২ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা। তিনি কক্সবাজার থেকে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছিলেন একটি বেসরকারি বিমানের ফ্লাইটে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রহরীদের হাতেই তল্লাশীর সময় ধরা পড়ে গেলেন তিনি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানায় গতকাল পুলিশের উপস্থিতিতেই আনোয়ারা বেগম জানান, বাসায় তার পঙ্গু স্বামীকে রেখে তিনি রেজাউল করিম নামের একজন ইয়াবা করাবারির সাথে বিমানে যাচ্ছিলেন ঢাকায়। তার বাসা কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিরছড়া এলাকায়। তিন কন্যা এবং এক পুত্র সন্তানের মা আনোয়ারা বেগম ইয়াবা বহনকারী হিসাবে কাজ করে আসছেন। ইতিপূর্বে বিলাসবহুল এসি বাসের যাত্রী হিসাবে ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে দুইবার পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছেন চট্টগ্রামে। কারাগার থেকে গত কিছুদিন আগে বের হয়ে এবার রুট পরিবর্তন করে যাচ্ছিলেন বিমানের যাত্রী সেজে।
আনোয়ারা জানান, আমার প্রতিবেশী রেজাউল করিম (২৬) নামের একজন কারবারির ইয়াবা এসব। বিমানবন্দরে আমাকে তল্লাশী করার পর ইয়াবা ধরা পড়ায় রেজাউল পালিয়ে গেছে। বাসায় দুই সন্তান রেখে আর দুই সন্তান নিয়েই তিনি রেজাউলসহ বিমানে করে ইয়াবার চালান নিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকায়।
ইয়াবার চালান নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল টিফিন ক্যারিয়ারে করে। তাও পাটিসাপটা পিঠার সাথে টিফিন ক্যারিয়ারে ভরা হয়েছিল ইয়াবা বড়িগুলো। বিলাসবহুল এসি কোচে দুইবার ধরা পড়ার পর এবার আনোয়ারা টেস্টকেস হিসাবে অল্প পরিমাণের ইয়াবা নিয়ে রওয়ানা দিয়েছিলেন বিমানে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম কালের কণ্ঠকে জানান, আনোয়ারা বেগম একদম পাকা ইয়াবা কারবারি। এটা তার চালচলনেই বুঝতে কষ্ট হয় না। তিনি বলেন, একজন নারীর ঘরে তার পঙ্গু স্বামী বেকারত্ব জীবন কাটাচ্ছে। অথচ তার স্ত্রী চমৎকার বেশভূষণে বিমানের টিকেটে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছেন। এ ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা ইদানিং বেড়েও গেছে মাত্রাতিরিক্তভাবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিমানে ইয়াবা নিয়ে ধরা পড়া আনোয়ারার বাবার বাড়ি কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ধেছুয়া পালং গ্রামে। ওই গ্রামের কৃষক আলী আহমদের দুই কন্যা এবং দুই পুত্র সবাই জড়িত রয়েছে ইয়াবা কারবারে। আনোয়ারার দুই ভাই যথাক্রমে মিজান ও খালেক বর্তমানে আটক রয়েছে কারাগারে।
খুনিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানান, তার কাছে খবর রয়েছে যে, আনোয়ারার এক ভাই খালেক ইয়াবার চালান নিয়ে ধরা পড়ে বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন। অপর ভাই মিজানও ইয়াবার চালান নিয়ে ধরা পড়ে চট্টগ্রামের কারাগারে আটক আছেন। আনোয়ারার কনিষ্ঠ বোন ছেনুয়ারা বেগমও ইয়াবার চালান নিয়ে ধরা পড়ে চট্টগ্রামের কারাগারে ছিলেন বেশ কয়েক মাস।
চেয়ারম্যান মাবুদ আক্ষেপ করে জানান, সম্প্রতি ছেনুয়ারাও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো কারবারে নেমেছেন বলে শুনেছি। এভাবেই একটি পরিবারের সকল সদস্যই ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়েছেন। আসলে করার কিছুই নেই। যতক্ষণ আমরা বলি ততক্ষণ পরিস্থিতি ভাল থাকে। তারপরই আবারো বেসামাল হয়ে পড়ে সবাই ইয়াবা নিয়ে। সূত্র: কালেরকন্ঠ।
বিডি২৪লাইভ/ এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: