আলোচনায় দুই দল, চার দলের উদ্বেগ 

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০১৮, ০২:৩৫ পিএম

একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইসির নিবন্ধন প্রত্যাশী ৭৫ দলের মধ্যে দুটি দল বাংলাদেশ কংগ্রেস ও গণআজাদী লীগ আলোচনায় রয়েছে। অপর দিকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর ৭ মাস পেরোলেও কার্যক্রম সম্পন্ন করতে না পারায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাসদ, গণসংহতি ও এনডিএম।

ইসি সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে তদন্তের কাজই শেষ করেনি নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে অসন্তোষ ও ক্ষোভ ঝাড়ছে আগ্রহী দলগুলো। সেই সঙ্গে নিবন্ধন বাছাইয়ের ফলাফল জানতে ধরনা দিচ্ছে কয়েকটি দল।

গেল বছরের অক্টোবরে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ইসি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৬টি দল আবেদন করে। ৫ মাস ধরে এ নিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করে। অথচ নির্বাচনী রোডম্যাপ মেনে এপ্রিলের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা ছিল।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্তি সচিব মখলেসুর রহমান জানান, নিবন্ধন আগ্রহী দলগুলোর মধ্যে মাত্র দুটি দলের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের অফিস-কমিটির তদন্ত করার সুপারিশ করেছে ইসির নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি। কমিশন তাদের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিলে তদন্ত হবে; না দিলে করার কিছুই নেই।

যথাযথভাবে গঠনতন্ত্র ও প্রয়োজনীয় দলিলাদি না থাকায় আলোচনায় থাকা মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জুনায়েদ সাকীর গণসংহতি আন্দোলন, শরীফ নূরুল আম্বিয়ার জাসদ একাংশের বাংলাদেশ জাসদ, ববি হাজ্জাজের এনডিএম নিবন্ধন যোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে না।

জানতে চাইলে ইসির উপ সচিব আব্দুল হালিম জানান, কমিশনের সিদ্ধান্ত পেলেই তারা মাঠ পর্যায়ে তদন্তের কাজে পাঠাবে কর্মকর্তাদের। তবে দলিলে বাংলাদেশ কংগ্রেস ও গণআজাদী লীগ নামে দুটি দলের সার্বিক আবেদন যথাযথ রয়েছে, বাকি কোন দলের ঠিক নেই বলে জানান ইসির একজন কর্মকর্তা।  
গণআজাদী লীগ ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরীক। দলটির সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ খান বলেন, ভোটের সময়ও কাছে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে নিবন্ধনের বিষয়টি ঝুলে আছে। আমরা যারা ভোট করতে চাই তাদের জন্য নিবন্ধন একটু আগে-ভাগে পেলে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হত। এখনও তদন্তের কাজই শেষ করেনি; তাহলে কখন নিবন্ধন চূড়ান্ত হবে?

বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন জানান, তারা ২০১৩ সালে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং সর্বশেষ গেল বছর কাউন্সিল করে। এখনও কোনো জোটভুক্ত হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় অফিস রয়েছে নয়াপল্টনে। নিবন্ধন পেতে ৩১টি জেলা ও ১১৭টি উপজেলা কমিটির তালিকা দিয়েছি। সব ধরনের সংস্থা আমাদের খোঁজ নিচ্ছে। আমাদের কেউ ডাকেনি। আশা করি, নিবন্ধন পাব। তবে আগাম কিছু বলতে পারছি না; শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় ইসি-তা দেখার অপেক্ষায়।

এদিকে জাতীয় সংসদে দুজন সংসদ সদস্য থাকার পরও নিবন্ধন না দিলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে বাংলাদেশ জাসদ। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন বলেছেন, কোনো বিশেষ ক্ষমতাবান ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে ছলচাতুরি করবেন না। আপনাদের প্রতি আমাদের আস্থা নষ্ট করতে চাই না। আপনারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের দলকে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নির্বাচন কমিশন যা চেয়েছে সেসব কাগজ আমরা দিয়েছি। কিন্তু তার কত অগ্রগতি হয়েছে সেটা জানতে গেলে নির্বাচন কমিশন বিরক্ত হয়। বলে পরে জানাবে, কবে জানাবে?

২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুর পর ৩৮টি দল নিবন্ধিত হয়। এরপর নবম সংসদে দুটি এবং দশম সংসদে দুটি দল নিবন্ধন পায়। এছাড়া শর্ত পূরণ না হওয়ায় দুটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে, যারা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারে।

বিডি২৪লাইভ/এএইচআর


 

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: