নির্বাচনের আগে মওদুদের যত অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৮, ০১:৫৭ পিএম

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন না দিতেও সরকার নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আইনগতভাবে জামিন পাবার অধিকারী হলেও দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয়নি। যে মামলায় নিম্ম আদালত তাঁকে সাজা দিয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং সরকার প্রধানের ইচ্ছা পূরণের রায়। তাঁর অন্যান্য মামলায় অনেকেই ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছেন। 

সোমবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রীকে এভাবে বন্দী করে শারীরিক ও মানসিকভাবে কষ্ট দেয়া সরকারের জন্য আনন্দের বিষয় হলেও দেশের জনগণ সর্বোচ্চ আদালতের কাছে সুবিচার প্রত্যাশী। যে সমস্ত মামলায় অন্য মানুষের জন্য বিচারে যে প্রতিকার দেয়া হয়েছে, একই মামলায় দেশনেত্রীর প্রতি ভিন্ন বিচার, ভিন্ন আচরণ দেশের জনসাধারণকে ব্যথিত করছে। উচ্চ আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা এখনও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়নি। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থলেও যদি ফাটল ধরে তাহলে গোটা দেশে নৈরাজ্য নেমে আসবে। সমাজ অরাজকতার অন্ধকারে ঢেকে যাবে। প্রতিহিংসা একধরণের বন্য বিচার। আদালত যদি সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের যন্ত্রে পরিণত হয় তাহলে দেশের জনগণ স্বৈরাচারী সরকারের ক্রীতদাসে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, সরকারের হিংসা ও বিদ্বেষের শিকার  বেগম খালেদা জিয়া। নিম্ম আদালত যদি ন্যায় বিচার করতো তাহলে তাঁকে সরকারের বিদ্বেষের শিকার হয়ে কারাগারে বন্দী অবস্থায় নির্মম যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস করতে হতো না। বিনা চিকিৎসায় দেশনেত্রীকে কারাগারে বন্দী জীবন কাটাতে হতো না। সরকারের নির্দেশেই নিম্ম আদালত বেগম জিয়াকে কষ্ট দিতেই অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে। যাতে সরকার দেশনেত্রীর জীবনকে নানাভাবে সংকটাপন্ন করতে সুযোগ পায়। বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ থাকুন সেটা সরকার চায় না বলেই তাদের হাতের মুঠোয় রাখতে নিম্ম আদালতকে ব্যবহার করেছে। এজন্য কারাগারে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকলেও সরকারের অংশ কারা কর্তৃপক্ষ দেশনেত্রীর কোন খবর রাখেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় থাকতে পছন্দ করে না, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা থেকে সরে যেতেও পছন্দ করে না। এজন্য রাষ্ট্রের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দখলে রাখা প্রয়োজন মনে করে। সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে দলীয় চেতনার লোক নিয়োগ দিয়ে কর্তৃত্ব সম্প্রসারণের কাজটি সম্পন্ন করেছে আওয়ামী সরকার। 

গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সর্বত্র সরকারের ম্যাসেজ প্রতিপালিত হচ্ছে অক্ষরে অক্ষরে। প্রতিটি লোকালয়ে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির কাজ খুব সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পাইকারি হারে গ্রেফতার, বাসায় বাসায় তল্লাশি, বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দকে আটক, নতুন করে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা ডিবি পুলিশের হানাদারী আগ্রাসন, সরকারি দলের মেয়র, মন্ত্রী ও নেতাদের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গসহ সর্বোপরি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পুলিশের গাড়ীতে করে প্রচারাভিযান ইত্যাদি ঘটনায় সরকারের ম্যাসেজটা কী তা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোটারদের বুঝতে বাকি নেই। 

এদিকে শুধু খুলনা মার্কা নয়, গাজীপুরে ভোট ডাকাতির সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়তে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইসি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আগামীকাল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে যে ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেখানে জনগণ অবাধে পছন্দানুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে এমন কোন পরিবেশ এখনও দৃশ্যমান নয়। জনগণের মধ্যে ভোট নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা আরও গভীরতর হচ্ছে। গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন পর্যন্ত যতটুকু খবর আমাদের নিকট এসেছে তাতে গাজীপুরে বাছাই করে করে দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মওদুদ আহমেদ।

বিডি২৪লাইভ/এএচইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: