রাত পোহালেই ভোট

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৮, ০৩:২৪ পিএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শুধু রাত পার করার প্রতিক্ষা। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২৫ জুন) প্রতিটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নির্বাচনী সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৬ জুন) সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত নতুন মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন গাজীপুরবাসী।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১২ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ২৯ প্লাটুন বিজিবির সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবে বিশেষ নজরদারি। ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে ইসি।

গত রবিবার (২৪ জুন) রাত ১২টার পর নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ জুন) সকাল থেকে নির্বাচনের সব সরঞ্জাম কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন উপলক্ষে গাজীপুরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা নিজ নিজ কেন্দ্রের মালামাল বুঝে নিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়া প্রহরায় ভোট কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছেন।

গাজীপুর সিটিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। এখানকার জনগণ উন্নয়নের জন্য নৌকায় ভোট দেবেন, এমনটাই তার প্রত্যাশা।

অন্যদিকে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। বলেছেন, বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে। তারা রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। দলীয়কর্মী ও আইনশৃংখলা বাহিনী দিয়ে ভোট জালিয়াতির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি।

নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৫৭টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, সংরক্ষিত আসনে ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এছাড়াও অতিরিক্ত একটিসহ মোট ৫৮টি টিম মোতায়েন থাকবে নির্বাচনে।

প্রতি দুইটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। এদের মধ্যে ৭ প্লাটুন কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন টঙ্গী এলাকায় এবং ১২ প্লাটুন জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে এই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ জটিলতাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট গত ৬ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেয়। এতে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচনী সব ধরনের কার্যক্রম।

পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশন। শুনানি শেষে ওই স্থগিতাদেশ স্থগিত করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: