বিএনপি কি নিজে থেকেই সরে যাচ্ছে?

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৮, ০৭:২০ পিএম

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে অবস্থান করা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে নাকি নিজেরাই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।

তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তাদেরকে রাজনীতি থেকে সড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিই তাদেরকে (বিএনপি) মাইনাস করেছে।

গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে দলীয় গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সর্বসম্মত প্রস্তাবে বিলুপ্ত ৭ নম্বর ধারার অনুরূপ একটি ধারা নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-আরপিও তে সংযোজন করার অপচেষ্টা চলছে। এরপর ওই ধারার দোহাই দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিএনপির নেতৃত্ব থেকে সরানোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘গত বুধবার ১১ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসংসদীয় কটুবাক্যের ধারাবর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন- ‘বিএনপি গঠনতন্ত্রে ৭ ধারা পরিবর্তন করলো কেন?’ প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য উদ্ভট, অলীক ও অন্তঃসারশূন্য।

‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুধুমাত্র বিএনপি এবং দলের নেত্রীর বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট অপপ্রচার। বিএনপি গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা গত ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে কাউন্সিলরদের দ্বারা সংশোধিত। আকস্মিকভাবে কয়েকদিন ধরে বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পরিবর্তন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দুরভিসন্ধিমূলক ও সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ।’

ফখরুলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেদিন বিকালে বলেন, ‘বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিই তাদের (খালেদা-তারেক) মাইনাস করেছে।’

কাদের আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুর্নীতি না করলে তো দণ্ড হতো না। তাদের নেগেটিভ রাজনীতির ব্যর্থতাই তারা মাইনাস হয়েছে। এখানে সরকারের কিছু করার নেই।’

‘তারা নিজেরাই তো নিজেদের মাইনাস করে ফেলেছে। সাহস দেখাতে না পারা, এই ব্যর্থতাই তো তাদের মাইনাস করেছে। তাদের নেগেটিভ রাজনীতির যে ব্যর্থতা, সেই ব্যর্থতাই তাদের মাইনাস করেছে।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকার মাইনাস করবে কেন? সাত ধারা বাতিল করতে কি সরকার বাধ্য করেছে। খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণার আট দিন আগে হঠাৎ করে রাতের অন্ধকারে তারা এক কলমের খোঁচায় তাদের গঠনতন্ত্র থেকে সাত ধারা উঠিয়ে দিয়েছে। সাত ধারাটা যেভাবে বাদ দিয়েছে এটা মধ্য রাতের ক্যু। এটা বিএনপির নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেদের গঠনতন্ত্রের বিরুদ্ধে মধ্যরাতের ক্যু।’

সাত ধারায় কী আছে তার বর্ণনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাত ধারায় আছে- রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮, ১৯৭২ এর বলে বিএনপির কোনো কর্মী যদি দণ্ডিত হন তাহলে সে নেতা পারবেন না। এমপি হতে পারবেন না। এমনকি যদি কোনো ব্যক্তি ব্যাংকে দেওলিয়া হয়, সামাজিক ভাবে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত হয়, তাহলেও সে নেতা কিংবা এমপি হতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘এই ধারাটা তারা মধ্য রাতে উঠিয়ে দিয়েছে। তাহলে কে কাকে মাইনাস করেছে। তাদের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তারা এখন আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল। তারা এখন সাত ধারা বাদ দিয়ে গঠনতন্ত্র আত্মস্বীকৃত দেওলিয়া দল।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: