হাবিপ্রবির ক্যাস্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৮, ০৮:৫৯ পিএম

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ( হাবিপ্রবি) দিনাজপুরের প্রগতিশীল কর্মচারী পরিষদের একাংশের ক্যাম্পাসে আলোচনা সভায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতির বক্তব্য নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রশাসন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করেছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ১২ জুলাই বৃহস্পতিবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ( হাবিপ্রবি) দিনাজপুরের প্রগতিশীল কর্মচারী পরিষদের একাংশ ক্যাম্পাসে আলোচনা সভার আয়োজন করেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ভিসি প্রফেসর রুহুল আমিন, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি আবু ইবনে রজ্জব । 

আলোচনা সভায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি আবু ইবনে রজ্জব তার বক্তব্যে বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার কারণে আমি দু-দুটি হত্যা মামলার আসামি হয়েছি। আমি এতে বিন্দু মাত্র চিন্তা করি না। যদি আরো দুইশটি হত্যাকাণ্ডের আসামি হতে হয়, আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার জন্য রেডি আছি’। 

&dquote;&dquote;ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেমকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেন, ‘আপনি দিনাজপুরের মানুষ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন, আর তা না হলে আমরা দিনাজপুরের মানুষ নিয়ে আপনাকে অবাঞ্জিত ঘোষণা করব, আপনি পালিয়ে যাওয়ার সময় ও রাস্তা পাবেন না’। সেদিন থেকে এই বক্তব্যটির রেকডিং হাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ে। ভিসি পন্থিদের মধ্যে শুরু হয় চাপা উত্তেজনা।  

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১ টার সময় হাবিপ্রবি পরিবারের ব্যানারে ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম পন্থিরা  হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ‘প্রগতিশীল কর্মচারী পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির একাংশের সভায় আবু ইবনে রজ্জব এর হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ’ লিখা ব্যানার নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করেন। তারা এ ধরণের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান । 

&dquote;&dquote;মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডীন বীর মুক্তিযুদ্ধা প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, আমরা আবু ইবনে রজ্জবের বক্তব্যের পর থেকে উদ্বিগ্ন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন পাট নন। তাই তিনি এ ধরণের বক্তব্য প্রদান করতে পারেন না। আমরা এর বিচার চাই।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. মিজানুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডীন বীর মুক্তিযুদ্ধা প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক,  পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস, পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস শাখার পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. মোস্তাফিজার রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নিদের্শনা বিভাগের পরিচাল প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো. বেলাল হোসেন, সহকারী প্রক্টর সৌরভ পাল চৌধুরী, কর্মকর্তা  কৃষিবিদ ফেরদৌস আলম ও কর্মচারী আজগর আলী বাবু ।

&dquote;&dquote;একই সময় হাবিপ্রবির ছাত্রলীগের একাংশ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রকার স্লোগান দেন। তারা ছাত্র পরামর্শ ও নিদের্শনা বিভাগের পরিচাল প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলামকে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানান। 

অপরদিকে সাবেক ভিসি প্রফেসর মো. রুহুল আমিন পন্থি প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা একই স্থানে দুপুর ১২ টার সময় অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। 

&dquote;&dquote;উল্লেখ্য গত ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ সন্ধ্যায় নবীন বরণ অনুষ্ঠান চলা কালে সংর্ঘষে গুলিতে  জাকারিয়া ও মিল্টন নামে দুই ছাত্রলীগ নেতা ঘটনা স্থলেই নিহত হয়। এইা ঘটনায়  মোট ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুইটি মামলার আসামি করা হয়েছে সাবেক ভিসি প্রফেসর রুহুল আমিন, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম রায়  দিনাজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কুমার ঘোস কাঞ্চন ও জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবসহ কয়েক জন নেতাকে। মামলা গুলি তদন্তাধীন রয়েছে।
 
বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: