ঝুঁকি নিয়ে নামায আদায় করছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০১৮, ০৪:৪৯ পিএম

ফযরের নামাযের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন এবং শহীদ সালাম বরকত হল সংলগ্ন মসজিদের গেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুর রহমানের সাথে দেখা। তিনি প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন এই মসজিদে। মসজিদটির ভিতরের অবস্থা কেমন জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, ছাদ ও দেয়ালে বিপজ্জনক ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে মৃত্যুর মতো অস্বাভাবিক ঘটনা।

মো. সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ছাত্র। তার কাছে মসজিদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বছরের পর বছর ধরে মসজিদের ভিতরে ব্যাপক ফাটল দেখে আসছি। দীর্ঘদিন ধরে এমন ফাটল থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে সংস্কার কাজ হচ্ছে না বলে দাবি তার। 

কেন সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। এই প্রশ্ন কেবল আব্দুর রহমান কিংবা মো. সাইফুল ইসলামের নয়। এই প্রশ্ন আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হল এবং শহীদ সালাম বরকত হলসহ ঐ মসজিদে নামায আদায়কারী অনেকের। 

এদিকে বছরের পর বছর মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েই নামাজ আদায় করছেন দুই হলের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। যেকোন সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। দুই হলের শিক্ষার্থীরা ভয়ে-ভয়ে প্রতি ওয়াক্ত নামায আদায় করে আসছেন। প্রশাসনের সামনেই এসব হচ্ছে তবুও তারা দেখেও না দেখার ভান করে আছেন বলে অভিযোগ দুই হলের শতাধিক শিক্ষার্থীর।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সালে নির্মিত হয় এই এক তলা মসজিদটি। নির্মাণের বছরেই ফাটল ধরে মসজিদটির। এরপর সামান্য সংস্কার করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েক বছরের তুলনায় গত বছর থেকে আবারও বড় ধরনের ফাটল ধরে মসজিদের ছাদ ও দেয়ালে। এ ব্যাপারে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এ মসজিদের ইমাম আবদুল কাদের বলেন, মূলত নির্মাণকাজ ভাল না হওয়ার কারণে মসজিদের দেয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে বার বার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধান নেননি তারা। 

ঝুঁকিপূর্ণ এ মসজিদটিতে প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও আশেপাশের এলাকা থেকে শতাধিক লোক নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন বলে জানা যায়। 

ঝুঁকিপূর্ণ মসজিদ সম্পর্কে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সাথে যোগাযাগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 

এ বিষয়ে মসজিদটির দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আ.ফ.ম কামাল উদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, আমি নিজেই মসজিদটি সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। সত্যি মসজিদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ইতোমধ্যে দুই হলের কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিনিয়ার সেকশনে কথা বলেছি। তাদের দেওয়া বাজেট অনুযায়ী মসজিদটি সংস্কারের থেকে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করা সম্ভব। আমরা মসজিদটির কাজ নিয়ে তৎপর রয়েছি। মসজিদ নির্মাণের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা বিভিন্ন ত্রাণ সেক্টর থেকে আসতে দেরি হওয়ার ফলে নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এ বছরের শেষের দিকে মসজিদের কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: