হাসপাতালে যেমন আছেন নওশাবা

প্রকাশিত: ২০ আগষ্ট ২০১৮, ০৮:৫৭ এএম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলার সময় ফেসবুক লাইভে এসে দুই ছাত্রকে হত্যা এবং একজনের চোখ তুলে নেয়ার মিথ্যা প্রচারের ঘটনায় গ্রেফতার অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গত ৪ আগস্ট রাতে র‌্যাবের হাতে আটক নওশাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফা রিমান্ডে নেয় পুলিশ। আর তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ১৩ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়েন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমার এই নায়িকা। পড়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও সেখানেই আছেন তিনি। নিউরো সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

কি হয়েছে এই নায়িকার? কেনই বা তাকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে? এখন কেমন আছেন তিনি? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কথা হয় অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে।

বর্তমানে নওশাবার শারীরিক অবস্থা কেমন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপাতত তিনি ভালোই আছেন। তবে তার মাথা ব্যাথা ও কোমরে সমস্যা রয়েছে। যেদিন তাকে ভর্তি করা হয় সেদিনই আমরা তার এমআরআই করেছি। পরে তাকে পুরাতন ভবনের ৪৩ নম্বর কেবিনে নেওয়া হয়।’

&dquote;&dquote;

এই সমস্যা কেন হয়েছে-এমন প্রশ্নে আর কিছু বলতে রাজি হননি চিকিৎসক শফিকুল।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট ফেসবুক লাইভে এসে নওশাবা উদভ্রান্তের মতো বলতে থাকেন, এই মাত্র দুই জন ছাত্রকে হত্যা এবং একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে। তিনি কথাগুলো এমনভাবে বলছিলেন যেন তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন।

কিন্তু নওশাবা কথা বলছিলেন উত্তরা থেকে আর তিনি ঘটনার কথা বলছিলেন জিগাতলার।

এই অভিনেত্রী সেদিন বলেন, ‘আমি কাজী নওসাবা আহমেদ, আপনাদের জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোটভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। আপনারা সবাই একসাথে হোন। প্লিজ ওদের প্রটেকশন দেন। বাচ্চাগুলো আনসেভ অবস্থায় আছে। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন। প্লিজ আপনারা রাস্তায় নামেন এবং ওদের প্রটেকশন দেন। এটা আমার রিকোয়েস্ট।’

নওশাবা আরও বলেন, ‘আমি এ দেশের একজন মানুষ, নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করছি যে, জিগাতলায় একটু আগে একটি স্কুলে একটি ছেলের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে এবং দুইজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। একটু আগে ওদের অ্যাট্যাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ প্লিজ ওদের বাঁচান। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখই নামবেন। আপনাদের বাচ্চাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান। এটা আমার রিকোয়েস্ট।’

‘যে পুলিশরা আছে, তারা অবশ্যই বাচ্চাদের প্রটেকশন দেন। আপনারা প্লিজ কিছু একটা করেন। সরকার যদি দায়িত্ব নিতে না পারে, তাহলে জনগণ কিসের জন্য আছেন আপনারা। আমরা ৭১-এ পেরেছি, ৫২-এ পেরেছি এবারও পারব। আমাদের দরকার নাই কাউকে।’

&dquote;&dquote;

আটক হওয়ার আগে আবার ফেসবুক লাইভে এসে নওশাবা বলেন, তিনি ব্যবহৃত হয়েছেন। একজনের কথায় বিশ্বাস করে ওই লাইভে এসেছেন তিনি।

পরে র‌্যাবকে নওশাবা জানান, রুদ্র নামে একজনের কথায় তিনি ওই ফেসবুক লাইভে আসেন। ওই তরুণের সঙ্গে তার পরিচয় হয় ৩ আগস্ট শাহবাগে।

এর মধ্যে ফেসবুক লাইভে গুজব ছড়ানোর অভিযোগের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় নওশাবাকে গত ৫ আগস্ট চার দিন এবং ১০ আগস্ট দুই দিনের রিমান্ড নেয় পুলিশ।

১৩ আগস্ট রিমান্ড শেষে এই অভিনেত্রীকে ঢাকা সিএসএম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে দুইজন নারী পুলিশ কন্সটেবলের সহায়তায় আদালতের দ্বিতীয় তলায় উঠানো হয়। কিন্তু তিনি মারাত্মকভাবে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আদালতের এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। সে সময় চিকিৎসা শেষে ফিরিয়ে আনা হলেও রাতে তাকে আবার ভর্তি করা হয়।

সেদিনের সেই গুজব নওশাবা ছাড়াও দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে বহুজনে ছড়িয়েছেন। এদের মধ্যে ৫১টি মামলায় মোট ৯৭ জনকে আটক করার তথ্য গত ১৬ আগস্ট জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এদের মধ্যে পাঁচজন নারী।

তবে নওশাবা যার কথা শুনে লাইভে আসেন, সেই রুদ্রকে আটক করা গেছে কি না, তা এখনও জানায়নি পুলিশ। আর নওশাবার কাছ থেকে কী তথ্য উদঘাটন করা গেছে, সেটিও প্রকাশ পায়নি এখনও।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: