যৌন বিকৃতি থেকে যেভাবে বেরিয়ে আসবেন

প্রকাশিত: ২৬ আগষ্ট ২০১৮, ১০:৪৭ পিএম

যৌন বিকৃতি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ভীষণ প্রতিকূল একটি সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটি উত্তরাধুনিক সভ্যতার এক নিরব ঘাতক। কিশোর-তরুণ-যুবকদের মাঝে বিভিন্ন রকমের যৌন বিকৃতি তৈরী হয়ে থাকে। সাধারণত শৈশবের প্রতিকূল পরিবেশ, খারাপ সঙ্গ, সঠিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাব, পর্নগ্রাফির প্রতি আসক্তিসহ আরো নানা কারণে মানুষের ভেতরে যৌন বিকৃতি তৈরী হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক, এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায়গুলো।

১) যৌনতা সম্পর্কে বদলে ফেলুন মানসিকতা: যৌনতাকে নিছক বিনোদন হিসেবে দেখার চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসুন। এর সাথে শরীর ও মনের গভীর যোগসূত্র রয়েছে। সম্পর্ক রয়েছে দাম্পত্য জীবনের সাফল্য-ব্যর্থতার। নতুন একটি প্রাণ জন্ম নেয় এ থেকে। সুতরাং, যৌনতা মোটেও হেলাফেলার জিনিস নয়। এ সম্পর্কে যতোটা সম্ভব পড়াশোনা করুন। জানার চেষ্টা করুন। এর ফলে সঠিক উপায়ে আপনি যৌনতাকে পরিচালিত করা শিখতে পারবেন।

২) সরিয়ে ফেলুন পর্নগ্রাফিক উপাদান: আপনার কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফোন থেকে সরিয়ে ফেলুন পর্নগ্রাফিক সমস্ত এলিমেন্টস। এগুলো থাকলে বারবার আপনার মাঝে বিপথগামী হওয়ার চিন্তা তৈরী হবে। পর্ন থেকে একবার মুক্ত হতে পারলে, অটোম্যাটিক্যালি আপনি যৌন কু অভ্যাসগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

৩) সম্মান করুন নারীদের: নারী সম্পর্কে ভোগবাদী মানসিকতা গড়ে উঠবার ফলে আমরা তাদের একপ্রকার মাংসপিন্ড হিসেবে ভাবতে থাকি। যেহেতু পৃথিবীজুড়ে নারীরাই যৌন সহিংসতার প্রধান শিকার; সুতরাং তাদের প্রতি আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা লালন করতে হবে। তাদের সম্মান করতে না শিখলে, আপনি যৌন বিকৃতি থেকে বের হতে পারবেন না কখনও।

৪) না বলুন মাস্টারবেশনকে: মাস্টারবেশনের শারীরিক ও মানসিক কুফল অপরিমেয়। আপনি হয়তো পুরুষত্বও হারিয়ে ফেলতে পারেন এজন্য। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এটা হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। বাড়িয়ে দেয় রক্ত চাপ। সেইসাথে সুস্থ দাম্পত্যের ক্ষেত্রেও এটি একটি প্রধান বাধা। তাই মাস্টারবেশনকে না বলুন আজই।

৫) মেনে চলুন ধর্মীয় অনুশাসন: প্রতিটি ধর্মই আমাদের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা শিক্ষা দেয়। সেসব থেকে আমরা জীবনে মহত্তর উদ্যোগ নেওয়ার প্রেরণা সংগ্রহ করতে পারি। আর নিয়মিত প্রার্থণা ও ইবাদাতে অংশ নিতে পারলে, আপনি অবশ্যই মানসিকভাবে অনেক প্রশান্তি অর্জন করতে পারবেন। সুতরাং, অবৈধ ও বিকৃত যৌনাচার থেকে বেরোনোর জন্য ধর্মীয় গ্রন্থগুলো পাঠ করুন। সেই সাথে মেনে চলুন ধর্মীয় অনুশাসন ও আচারবিধি।

৬) গঠন করুন ভালো অভ্যাস: অবসরে বই পড়ুন। কিছু সময় গান শুনুন। সময় থাকলে প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে ঘুরে আসুন। এছাড়া প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে পারেন। জগিং কিংবা সাঁতারের সুযোগ থাকলে মিস করবেন না একটুও। এর সাথে নতুন কিছু শিখতে পারেন অবসরে। কম্পিউটারের গ্রাফিকসই হোক বা অন্য কোনো ভাষাই হোক; তা সবসময় আপনার স্কিল ডেভেলপ করবে।

৭) ইতিবাচক মানসিকতা ও ব্যক্তিত্ব গঠন: ইতিবাচক হতে হবে আপনাকে। মন থেকে কল্পনার যৌন ইলিউশানগুলো মুছে ফেলতে হবে। এজন্য মানসিক দৃঢ়তা ও প্রচুর পজেটিভ এনার্জি দরকার হবে আপনার। তাই বন্ধু ও আত্নীয়দের সহায়তা নিতে পারেন। একটা ভালো আড্ডা বা বহির্মুখী যেকোনো উদ্যোগ আপনাকে যৌনতার কুপ্রভাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবে অনেকাংশে। একান্তই সম্ভব না হলে মনোবিদের শরনাপন্ন হতে পারেন। তার কাউন্সেলিং অনুযায়ী চললেও বিকৃত যৌনাচার থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন আপনি। 

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

বিডি২৪লাইভ/এএআই/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: