কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন ‘ভুয়া’, বলল নেপাল
নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ সুলতানকে নিয়ে কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে নেপালের সরকার গঠিত অনুসন্ধান কমিশন। ওই প্রতিবেদনকে ‘অনৈতিক ও প্রতারণামূলক’ বলেও মন্তব্য করেছে দেশটির অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশন।
সোমবার (২৭ আগস্ট) রাতে কমিশনের সদস্য সচিব বুদ্ধি সাগর লামিচ্ছানে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাঠমান্ডু পোস্টে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন নিয়ে কমিশন ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং অসন্তুষ্ট’।
নেপালের অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কমিশনের কাজের মূল উদ্দেশ্য হল ওই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে চেষ্টা করা। সেই তদন্ত এখনও চলছে। কমিশন বিশ্বাস করে, দুর্ঘটনার তদন্ত ‘গণমাধ্যমের প্রপাগান্ডার’ বিষয় নয়।
এর আগে সোমবার কাঠমান্ডু পোস্টের সংবাদ সঠিক নয় বলে জানায় বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে যে তদন্ত চলছে তাতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ফ্লাইট অপারেশন কনসালটেন্ট সালাউদ্দিন এম রহমত উল্লাহ।
এই কর্মকর্তা বলেন, এই দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও যেখানে শেষ হয়নি। ফলে এর প্রতিবেদন জনগণের সামনে উপস্থাপনের পর্যায়ে আসেনি। এই অবস্থায় নেপালি পত্রিকা কীভাবে তদন্ত প্রতিবেদনের সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সেটা তার কাছে স্পষ্ট নয়।
রহমত উল্লাহ জানান, নেপালি পত্রিকায় এই প্রতিবেদন দেখে তিনি দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তারাও এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেনি।
‘আমি এই কমিটির মেম্বার হিসেবে জানি, এই অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। তদন্ত অর্ধেকের কিছুটা বেশি হয়েছে। তবে তা সাধারণ মানুষকে জানানোর মতো নয়।’
‘নেপাল অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশনের যে চেয়ারপারসন এবং উনার যে মেম্বার সেক্রেটারি, তাদের সঙ্গে আমি কথা বললাম। তারাও এটা স্বীকার করেছেন যে এটা সম্পূর্ণরূপে ভুয়া। আমি বলেছি কাঠমান্ডু পোস্টের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে।’
গত ১২ মার্চ দুপুরে ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে রওনা হয়ে কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন বিমানবন্দরে নামার সময় বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-টু ওয়ান ওয়ান। আরোহীদের মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়, যাদের ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি।
এরই মধ্যে কাঠমান্ডু পোস্ট এক প্রতিবেদনে এই দুর্ঘটনার জন্য উড়োযানটির ক্যাপ্টেন আবিদ হাসানকে দায়ী করা হয়। এতে বলা হয়, এই পাইলট ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্তও ছিলেন। আর কো পাইলট পৃথুলা রশীদের সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলছিলেন এবং এ কারণে পৃথুলা চাকরি ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ক্যাপ্টেন আবিদ ‘ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মারাত্মক মানসিক চাপ ও উদ্বেগের’মধ্যে ছিলেন এবং ওই অবস্থায় তিনি একের পর এক যেসব ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন। তার পথ ধরেই কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়।
পত্রিকাটি দাবি করেছে, ওই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের অনুলিপির ভিত্তিতেই তারা সংবাদটি প্রকাশ করেছে।
যেখানে আরও বলা হয়েছে, পাইলট আবিদ সুলতান ত্রিভুবনে নামার প্রস্তুতির সময় বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ‘অসত্য’ তথ্য দিয়েছিলেন।
কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, ফ্লাইটের পুরো সময়টায় প্রধান বৈমানিক আবিদের আচরণ তার স্বাভাবিক চরিত্রের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না’।
তবে ইউএস বাংলার পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বিমান সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্ল্যাক বক্সের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কি বের হয়েছে? ওই প্রতিবেদনের কোথাও কি লেখা আছে যে, এটা ব্ল্যাক বক্স প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে?’
‘ব্ল্যাক বক্সের এই রিপোর্ট তো নেপালের তরফ থেকে আসবে না। আসবে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটির তরফ থেকে। আর এটাকে তদন্ত রিপোর্ট বলারও সুযোগ নেই। এটা একটা অবান্তর রিপোর্ট। ইউএস বাংলা ও পাইলট আবিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এটা হয়েছে।’
বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: