চোখ পরীক্ষায় দেরি হলেই ক্ষতি
শিশুদের চোখের সমস্যা স্থায়ী হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ সঠিক সময়ে তাদের চোখ বা দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা হয়না। এবং এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক করেছেন যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করে ব্রিটেনের অ্যাসোসিয়েশন অব অপটোমেট্রিস্টস-এওপি। তারা ১২শ জনের ওপর জরিপ পরিচালনা করে জানতে পারে যে এর মধ্যে এক চতুর্থাংশ শিশুর বাবা মা তাদের সন্তানদের সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা করান না।
এছাড়া বাবা মায়ের ওপরে জরিপ চালিয়ে জানা যায় যে তাদের ৫২ শতাংশই ভাবতেন যে তাদের সন্তানদের চোখ পরীক্ষা বুঝি তাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়েই দেয়া হবে।
এজন্য তারা আর নিজ উদ্যোগে সন্তানদের চোখ পরীক্ষা করাননি। এটা ঠিক যে, ব্রিটেনের কিছু স্কুলে চোখ স্ক্রিনিংয়ের সুবিধা রয়েছে। তবে ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস-এনএইচএস থেকে বিনামূল্যের যে সেবা দেয়া হয়, সেটা এই চোখ স্ক্রিনিং পরীক্ষার চাইতে অনেক ভাল।
তবে সঠিক সময়ে শিশুর চোখ পরীক্ষা না করালে, রোগের চিকিৎসার ভাল ফল পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
শিশুদের চোখে যে সমস্যাটি হয়ে থাকে:
বিশ্বের প্রতি ৫০জন শিশুর মধ্যে একজন চোখের অ্যাম্বলিওপিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যেটা কিনা ‘অলস চোখ’ নামে পরিচিত। এই রোগে আক্রান্ত শিশুর একটি চোখ অপরটির তুলনায় দুর্বল হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দুটি চোখের দৃষ্টিশক্তিই দুর্বল হতে পারে। মূলত, এই রোগের ফলে আক্রান্তদের একটি বা উভয় চোখ মস্তিষ্কের সঙ্গে শক্তিশালী সংযোগ সৃষ্টি করতে অক্ষম হয়ে পড়ে।
এতে ওই শিশুগুলোর দৃষ্টিশক্তি সঠিকভাবে বিকাশ লাভ করতে পারেনা। তবে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে তা পুরোপুরি সারিয়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কোন বয়সে পরীক্ষা করাতে হবে?
ব্রিটেনের এনএইচএস সুপারিশ করে যে শিশুর বয়স চার বছর হলেই যেন তাদের চোখ পরীক্ষা করানো হয়। কেননা ছয় বছর বয়সের পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখের চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। শিশুদের চোখের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে সঠিক পাওয়ারের চশমা পরানো সেইসঙ্গে আই প্যাচ ও চোখের ড্রপ দেয়া। যেন তাদের দুর্বল চোখগুলোকে সারিয়ে দৃষ্টি আরও স্পষ্ট করে তোলা যায়।
জেনে রাখা জরুরি:
অ্যাসোসিয়েশন অফ অপটোমেট্রিস্টস (এওপি) এ বিষয়ে আরও ১২৪৬ জন প্র্যাকটিসিং অপটোমেট্রিস্ট অর্থাৎ সেবায় নিয়োজিত চক্ষু বিশেষজ্ঞের ওপর গত বছর একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে,
১. ৭৪% শতাংশ চিকিৎসকই জানান যে তাদের কাছে যেসব শিশু চিকিৎসা নিতে এসেছিল, তাদের রোগটি আরও আগে সনাক্ত করা গেলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা আরও সফলভাবে সমাধান করা যেত।
২. এর মধ্যে, ৮৯% পরীক্ষাতেই অ্যাম্বলিওপিয়া রোগটি নির্ণয় হয়। যদি তারা আরও আগে চিকিৎসা নিতে আসতো তাহলে আরও ভাল চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হতো। প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।
প্রতিবেদনে এওপি এর ফারাহ টপিয়ার বক্তব্য তুলে ধরা হয়। যেখানে তিনি জানান, ‘শিশুর দৃষ্টিশক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে তার চোখের অবস্থা সম্পর্কে জানা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া অনেক জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাম্বলিওপিয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসা আগেভাগে করালে দৃষ্টিশক্তি ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।’
যুক্তরাজ্যে ১৬ বছরের নীচে সব শিশুরা এনএইচএস তহবিলের আওতায় বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা করাতে পারে।
শিশুদের চোখের পরীক্ষায় আপনার আশেপাশে এ ধরণের আর কি কি সুযোগ সুবিধা রয়েছে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন করে তোলা ভীষণ জরুরি বলে মনে করেন, চিকিৎসক ফারাহ টপিয়া।
এ ব্যাপারে একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে এওপি। সেখানে তারা সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন তহবিল বা সুবিধার আওতায় শিশুদের প্রতিবছর চিকিৎসকের পরামর্শ চোখ পরীক্ষার ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন করে থাকেন।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: