হঠাৎ প্রকাশ্যে এসে বিএনপি নেতার হুঁশিয়ারি!

প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৬ পিএম

বেশিরভাগ সময় আত্মগোপনে থাকলেও হঠাৎ প্রকাশ্যে এসে সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল।

দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় যোগ দিয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসের হিসাব নেয়া হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।

শনিবার ( ১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জনসভায় সরকারের উদ্দেশ্যে সোহেল বলেন, ‘অসুস্থ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসের পাওনা হিসাব নেয়ার সময় এসেছে। অবশ্যই হিসাব নেয়া হবে।’

এ সময় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও সাবধান হয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

সোহেল বলেন, ‘আমরা ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি। অথচ আমাদের চেয়ারপারসন আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই, উনি জেলখানায়। বিষয়টি আমাদের জন্য একইসঙ্গে যন্ত্রণার, দুঃখ ও লজ্জার।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রীকে জেলে রেখে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী আপনি সেজেগুজে পারফিউম মেখে দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়াবেন? এইভাবে কি দেশ চলবে? এভাবে দেশ চলতে পারে না। আওয়াজ কি শুনতে পাচ্ছেন? শেখ হাসিনা- আপনার পতনের আওয়াজ কি শুনতে পাচ্ছেন?’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্লোগান দিয়েছিলো আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। বাস্তবে কি উন্নয়ন দেখা যায়? উন্নয়নের চিহ্ন নাই, গণতন্ত্র তো মরেই গেছে।’

নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে পাড়ায়-মহল্লায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ, দেশকে পরিষ্কার করতে হবে। এই আওয়ামী লীগের যতো নির্যাতনকারী হেলমেটবাহিনী-চাপাতিবাহিনী আছে সব পরিষ্কার করতে হবে।’

পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের বেতন কিন্তু আওয়ামী লীগ দেয় না, দেশের জনগণ দেয়। তাই জনগণের পক্ষে কাজ করুন, আওয়ামী লীগের পক্ষে নয়। কিছু পুলিশের কার্যক্রম দেখে লজ্জা লাগে, এতোই যদি দল করার ইচ্ছা থাকে তাহলে পুলিশের পোশাক বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের কোট পরিধান করুন, নইলে পরিস্থিতি কিন্তু ভালো হবে না।’

‘বাড়াবাড়ি করলে ঠ্যাং ভেঙে দেবো’

জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারকে বলতে চাই, আপনাদের কিসের ইভিএম-টিভিএম? বেশি বাড়াবাড়ি করলে ঠ্যাং ভেঙে দেবো।’

দুদু বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারারাত সরকার পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে হাসিনা সরকারের উদ্দেশ্যে বলে যেতে চাই, ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে অনেক বার বলেছি, বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে গেছে, বেগম জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার রুমটা একটু ভালো করেন। কিন্তু আপনি তা শোনেন নাই। বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেদিন কি আপনি এই দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারবেন? কথা খুব পরিষ্কার, ব্যাংক থেকে নিয়েছেন ৪ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা আপনাকে দিতে হবে। এটা বাংলাদেশের টাকা।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইলিয়াস আলীকে ফেরত দেবেন না? চৌধুরী আলমকে ফেরত দেবেন না? বেগম জিয়াকে যেখানে রেখেছেন, আপনাকে বলি- আপনি সেখানে ঢুকবেন কিন্তু কবে বেরোবেন- সেটা কেউ বলতে পারবে না। সংসদ ভেঙে দিন, পদত্যাগ করুন। সমানে সমানে আসুন- তারপর দেখবো কত ধানে কত চাল।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন জিয়াউর রহমান, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন জিয়া ও তার বাহিনী। আপনার বাপের দেশ যা খুশি তাই করবেন? বেগম জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। আমরা বেগম জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যাবো।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: