এবার ‘মওকুফ ঋণও’ ফেরত দিতে হবে ইউনূসকে!

প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:২১ পিএম

নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে ১৮ বছর আগে মওকুফ করা ঋণের অর্থ ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে গ্রামীণ ব্যাংক, ড. ইউনূসের পারিবারিক এ প্রতিষ্ঠানকে ঋণের পুরো অর্থ মাফ করে দিয়েছিল। তাই এখন সুদাসলে ঋণের অর্থের পুরোটা ফেরত দিতে হবে প্যাকেজেস করপোরেশনকে।

এছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করায় ওইসব প্রতিষ্ঠানে অডিটর নিয়োগ করতে পারে সরকার। এসব বিষয় চূড়ান্ত করতে চলতি মাসের ২০ তারিখে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান নামে পরিচিত প্যাকেজেস করপোরেশনকে ২০০০ সালে ৮৯ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে সুদসহ এ ঋণের পুরো অর্থ মওকুফ করে দেয় গ্রামীণ ব্যাংক। বর্তমানে এ অর্থের পরিমাণ সুদাসলে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অবৈধভাবে এ অর্থ মওকুফ করা হয়েছে। তাই সুদাসলে এ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংককে ফেরত দিতে হবে।

তবে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে, ঋণের এ বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের দাবি মেনে না নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় আবার বিষয়টি পর্যালোচনা শুরু করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে; সরকারের উচিত, ঋণের অর্থ ফেরত পেতে গ্রামীণ ব্যাংককে নির্দেশনা প্রদান করা। এ বিষয়সহ গ্রামীণ ব্যাংকের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর একটি সভা ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এ ঋণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি না হলেও গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থায়নের গঠিত স্পেশাল ভেঞ্চার ক্যাপটিল ফাউন্ডেশন (এসভিসিএফ) তহবিল থেকে প্যাকেজেস করপোরেশনের অনুকূলে স্টাডিজ, ইনোভেশন, ডেভেলপমেন্ট এবং এক্সপেরিমেনশন (এসআইডিই) প্রকল্পের উদ্দেশের বাইরে অবৈধভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকের স্বার্থ ক্ষুণ্য হয়েছে।

তাই এসভিসিএফ তহবিল যদি গ্রামীণ ব্যাংকে এখনও বিদ্যমান থাকে, তাহলে প্যাকেজেস করপোরেশনকে ওই ঋণের মওকুফকৃত আসল পরিশোধে উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক প্যাকেজেস করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে পারে। এ বিষয়ে সরকার গ্রামীণ ব্যাংকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করতে পারে। ২০ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে। বৈঠকে আইনগত দিক নিয়েও আলোচনা করা হবে।

জানা গেছে, ১৯৬১ সালে পাকিস্তান প্যাকেজেস করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির মালিক ছিলেন দুলা মিয়া সওদাগর (ড. ইউনূসের বাবা) ও তার ছেলেরা। ওই পরিবার এখনও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। শেয়ারহোল্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে মুহাম্মদ ইউনূস এখনও আছেন। গ্রামীণ ব্যাংক ও প্যাকেজেস করপোরেশনের মধ্যে ১৫ বছরের জন্য ব্যবস্থাপনা এজেন্সি চুক্তিটি হয় ১৯৯০ সালের ১৭ জুন। ১৯৯৭ সালে প্যাকেজেস করপোরেশনের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ সামগ্রীকে।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: