অতিরিক্ত ভাড়াতেই সিটিং এখন লোকাল!

প্রকাশিত: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:১১ পিএম

আহমেদ ফেরদাউস খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: লেগুনা নিষিদ্ধের সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে রাজধানী সিটিং সার্ভিসের নামে চলা বাসগুলো। রাজধানীতে এখন সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়াতেই লোকাল সার্ভিস পাচ্ছে যাত্রীরা। নিজেদের করা সিটিং সার্ভিসের নিয়ম নিজেরাই মানছেন না সার্ভিসগুলো। যখন তখন যেখানে সেখানে গাড়ি থামানো না থামনো ও সিটের বেশি যাত্রী না নেয়ার নিয়ম নিজেরাই মানছেনা।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে চলাচলরত গাড়িগুলো লোকাল সার্ভিসে ফিরে এলেও কমেনি ভাড়া। কয়েকগুন বেশি ভাড়ায় সিটিং সার্ভিস নামের লোকাল সার্ভিসেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।

সরেজমিন দেখা যায়, বিকল্প ব্যবস্থা না করে লেগুনা নিষিদ্ধ করায় রাজধানীতে বন্ধ রয়েছে যানটি। এতে যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে সিটিং সার্ভিসের নামে চলাচলরত বাসগুলো। কয়েকগুন বেশি ভাড়াতেই গাড়ি বোঝাই করে যাত্রী নিচ্ছে। বাসগুলোতে যাত্রীদের তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

এ বিষয়ে ইমরান হোসাইন নামের এক যাত্রী বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘লেগুনা বন্ধ থাকার সুযোগটা খুব ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে বাসগুলো। সিটিং বাসকে লোকাল বানিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার চিটিং করা হচ্ছে সবার সাথে। অনেকেই প্রতিবাদ করছেন, আবার অনেকে প্রতিবাদ করে ফল পাবেনা জেনে মেনে নিচ্ছেন এ দুর্নীতি!’

‘রাজধানীতে সিংহভাগ বাসই সিটিং সার্ভিস। তবে সবগুলোই এখন লোকাল সার্ভিসে পরিণত হয়েছে। আর সিটিং সার্ভিসের ভাড়াই নিচ্ছে। পাশাপাশি যত্রতত্র স্থান থেকে যাত্রী তুলছে। অথচ তাদের নির্দিষ্ট করা স্টপেজগুলোতে যাত্রী ওঠা-নামা করার কথা। আর বাসের সিটের অতিরিক্ত কোনো যাত্রী তুলবে না। কিন্তু এখন আর এ নিয়ম মানছে না।’

তিনি বলেন, ‘এখন সিটিং সার্ভিসে চড়ে সেবা পাচ্ছি লোকাল সার্ভিসের। গত দুদিন ধরের সিটিং সার্ভিসে উঠে দেখা যাচ্ছে সিট তো দূরের কথা দাড়িয়ে থাকারও উপায় নেই। বাসে বসে আছে ৫০ জন, দাঁড়িয়ে আছে হয়তো আরও বেশি। দম ফেলা যেখানে কষ্টকর্র। সেখানে ভাড়া তোলার বেলায় বলা হচ্ছে এটা সিটিং সার্ভিস। এ শহরে এখন সিটিং সার্ভিসের নামে চিটিং সার্ভিস।’

বিকল্প ব্যবস্থা না করে লেগুনা নিষিদ্ধ করা উচিৎ হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিকল্প ব্যবস্থা না করে লেগুনা নিষিদ্ধ করা উচিৎ হয়নি। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। এ বিষয়ে সরকারে দৃষ্টি দেয়া উচিৎ।’

সিটিং সার্ভিসের নামে অভিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অনেক আগ থেকেই অভিযোগ ছিলো যাত্রীদের। এবার যুক্ত হয়েছে সির্টি সার্ভিসের নামে লোকাল সার্ভিস পাওয়ার অভিযোগ। সিটিং সার্ভিসের বিরুদ্ধে ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ থাকলেও নারী ও শিশু যাত্রীদের জন্য ছিল কিছুটা নিরাপদ। এখন আর এ সার্ভিস কোন যাত্রীর জন্যই নিরাপদ নয়। আর পকেট কেটে নেয়ার যন্ত্রণা তো রয়েই গেল!

অতিরিক্ত যাত্রী কেন নিচ্ছেন এমন প্রশ্নে রামপুরা থেকে মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলরত আলিফ পরিবহণের চালক মো: দুলাল বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘লেগুনা বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চাপ সামলানো অনেক কষ্টকর। আমরা না চাইলেও যাত্রীরা জোড় করে ওঠে। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।’

‘যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়াতে তাদের সামনে আমরা অনেকটা অসহায়। তাছাড়া এখন অফিস টাইম। এখন জোড় করে হলেও যাত্রীদের অফিসে যেতে হচ্ছে। তাই যাত্রীরা এক ধরণের জোড় করেই গাড়িতে ওঠছে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আগে যে ভাড়া নিচ্ছি এখনও একই ভাড়া নিয়ে থাকি। আমাদের অভিল আছে, অভিল থেকে গাড়িতে যে ক’জন যাত্রী থাকে সে ক’জনের সংখ্যা লিখে দেয়। এর থেকে ভাড়া কম নিলে আমাদের পকেট থেকে জরিমানা দিতে হবে। তাই আমরা চাইলেও নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম নিতে পারি না।’

বিডি২৪লাইভ/এএইচ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: