জরুরি সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন ড. কামাল

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:০১ পিএম

দীর্ঘদিন চুপচাপ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ সরব বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। সম্প্রতি বিএনপি জমানার এই রাষ্ট্রপতি ডা. বি চৌধুরীকে নিয়ে একটি জোটও তৈরি করেছেন। নাম দিয়েছেন ‘যুক্তফ্রন্ট’।

হঠাৎ করেই সোমবার ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন গণফোরামের এই সভাপতি। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। আর সেখানে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার জিয়ার চিকিৎসা ও গণগ্রেফতার প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।

জামায়াতকে নিয়ে ঐক্য প্রসঙ্গে গণফোরামের অবস্থান পরিস্কার করেন ড. কামাল হোসেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে জোটবদ্ধতার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘আমার দল করবে না। অন্য দলের কথা বলতে পারবো না। তবে জামায়াত তো এখন দলই নেই। তারা নির্বাচন করতে পারবে না।’

তবে অন্য দলগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রচেষ্টা ইতিবাচকভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। ঐক্য হলে আপনারা জানতে পারবেন।’

খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া উচিৎ এবং চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন।’

‘সরকারের ভুলে যাওয়া উচিৎ নয় আমরা সভ্য সমাজে বাস করি,’ মূলত কারাগারের বাইরে পছন্দের হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পাবার অধিকার নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

যদিও সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা তার বক্তব্যে খালেদা জিয়ার নাম উচ্চারণ করেননি।

এছাড়া, কারাগারে আদালত বাসানোর প্রসঙ্গ টেনে ড. কামাল বলেন, ‘আমি আদালতে গেলে বলব এটা সংবিধানসম্মত না। তবে কোর্টই বিচার করবে এটা আসলেই সংবিধানসম্মত কিনা।‘

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারকাণ্ড নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন ড. কামাল। মূলত এসব ধরপাকড় নিয়েই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ড. কামাল বলেন, ‘যেভাবে ধরপাকড় হচ্ছে এটা নিয়ে উদ্বেগের কারণ আছে। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে ওয়ারেন্টসহ ইউনিফর্ম পরে আসতে হবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। যেন সে জামিন চাইতে পারে। এখন যেভাবে সাদা পোশাকে ধরা হচ্ছে সেটা সংবিধানসম্মত নয়, আইনের লঙ্ঘন।’

‘বিশেষ কারণে দুই-একবার সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করা যেতে পারে। তবে এটা এখন নিয়মিত করা হচ্ছে। কারো অপরাধ থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাও সংবিধানে স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে কিভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। এখন যা হচ্ছে সরকার তা করতে পারেনা,’ ব্যাখ্যা করেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‘আমরা বেআইনি শাসনে চলে যাচ্ছি। সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। সাবধান হতে হবে। সমস্যার সমাধান করতে হবে। দ্রুত ধরপাকড় বন্ধ করা হোক। ক্ষমতার প্রয়োগ হবে আইন ও সংবিধানের ভিত্তিতে।’

ড. কামাল বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বাভাবিক পরিবেশ নেই। আমি আগে বলেছিলাম নির্বাচনটা আদৌ হবে কিনা। আসলে নির্বাচনটা হোক। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ দরকার। কিন্তু এখন ভয়ভীতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’

জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২২শে সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। একই দিন মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুমতি দেয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দীতে সরকারের সবাই সমাবেশ করতে পারে অথচ বিরোধীরা চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে না করে দেয়া হয়। এটা বৈষম্য। এটা সংবিধানের ১৬ আনা পরিপন্থী।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: