প্রেমিকের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে স্ত্রী, এরপর...

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৫০ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রকিবুল ইসলাম রাব্বি হত্যা মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নিহতের স্ত্রী তুশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী ১৮ সেপ্টেম্বর সারাদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন জামালপুর সদর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০), মেলান্দহ উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে খায়রুল ইসলাম প্লাবন (২৫), মাহমুদপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আতিক হাসান (২৪) ও আবুল কালাম আজাদের ছেলে মেহেদি হাসান (৩০)। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, তিনদিনের রিমান্ডে নিহতের স্ত্রী মৌটুসি আক্তার তুশি (২৩) পুলিশকে জানিয়েছেন, তার প্রেমিক রিয়াজ উদ্দিনের সাথে নিয়মিত প্রেম করতে গিয়ে শারিরিক সম্পক গড়ে উঠে। গত ৮ আগস্ট রাতে মৌটুসি আক্তার তুশি তার পরকীয়া প্রেমিক রিয়াজ উদ্দিনের সাথে অপকর্মে লিপ্ত হলে ওই চারজন পাহারা দেয়। আচমকা এ সময় তার স্বামী রকিবুল ইসলাম রাব্বি দোকান থেকে ফিরে ঘটনাটি হাতে নাতে ধরে ফেলে। এ কারনে রাব্বিকে তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক তার বন্ধুদের সহযোগিতায় শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে নিহতের লাশ সিলিংফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। 

এ ঘটনায় রকিবুল ইসলাম রাব্বির পিতা সরিষাবাড়ী পৌরসভার সাবেক কমিশনার খলিলুর রহমান তরফদার পরদিন ৯ আগস্ট তুশিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।পুলিশ ওইদিনই নিহতের স্ত্রী তুশিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। ১৬ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালত তাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বামীকে হত্যার বর্ণনা দেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে ৪ আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

উল্লেখ্য, সরিষাবাড়ী পৌরসভার সাবেক কমিশনার খলিলুর রহমান তরফদার কালুর ছেলে রকিবুল ইসলাম রাব্বি তিন বছর আগে সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে মৌটুসি আক্তার তুশিকে প্রেম করে পরিবারের অজান্তে পালিয়ে বিয়ে করেন। তারা আরাম নগর বাজার সংলগ্ন (সাতপোয়া) ফরিদ উদ্দিনের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বিয়ের পর থেকেই তাদের পারিবারিক অশান্তি ছিল। 

প্রতিদিন নিয়মিত রাত ১০/১১টার সময় কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরতেন রা্ব্বি। কিছু একটা সন্দেহ করে ঘটনার দিন কর্মস্থলের কাউকে কিছু না বলে বাসায় চলে যান। এবং স্ত্রীর পরকীয়া হাতেনাতে ধরে ফেলেন। রাত ১০টার দিকে রাব্বির বাবা ছেলের ফাঁসিতে ঝুলার সংবাদ পেয়ে শিমলা বাজার থেকে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করলে রাত ১২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান জানান, ঘাতক স্ত্রীকে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তার জবানবন্দি অনুযায়ী আরো চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: