ঢাকা শহরের ৪৬ খালের মধ্যে ২৬টি উদ্ধার

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:২৯ পিএম

নদীর সীমানা জটিলতা নিরসনকল্পে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করবে। নদীর তীর দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষাকল্পে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীসহ ঢাকার চারপাশে নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ‘টাস্কফোর্স’ এর ৩৮তম সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রী ও টাস্কফোর্স এর সভাপতি শাজাহান খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, গাজীপুর মহানগর ও নরসিংদীতে নতুন করে আর শিল্প-কল কারখানা গড়ার অনুমতি দেয়া যাবে না। নতুন শিল্প কল-কারখানা অর্থনৈতিক জোন এলাকায় গড়তে হবে। স্লোব করে নদী তীর বা খাল পাড় বাঁধাই করা যাবে না। খাড়া (সোজাসুজি) করে তীর বাঁধাই করতে হবে যাতে সেগুলো দখল হতে না পারে। প্রয়োজনে ওয়াকওয়ের সাথে ড্রাইভওয়ে নির্মাণ করতে হবে।

সভায় আরও জানানো হয়, ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে পুনঃরায় দখল হয়ে না যায় সেজন্য উল্লেখিত নদীগুলোর উভয় পাশে ২২০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে। ৫ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে আশুলিয়াতে ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাকি ১৫০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ কাজের প্রকল্প গ্রহণের স্টাডি চলমান রয়েছে। নদী তীরে বনায়ন ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে দু’টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। আশুলিয়া, সিন্নিরটেক ও টঙ্গিতে আরও তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে।

নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ৯,৫৭৭টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩,৮৫৬টি পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত ১,৭৫১টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে বিতর্কিত ২,১০৫টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হবে। নতুন করে ১০,৪০০ সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। নতুন সীমানা পিলারগুলো বড় ও দৃশ্যমান করে নির্মাণ করা হবে। বিআইডব্লিউটিএ নতুন করে ১৯টি আরসিসি জেটি নির্মাণ করবে।

বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫০১.২৬ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩০৭.২৬ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ১৯৪ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৯,৭৩০ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৬,৯৫১ টি এবং নারায়ণগঞ্জে ২,৭৭৯টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।

এতে জানানো হয়, ঢাকা শহরের ৪৬টি খালের মধ্যে ২৬টি খাল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি খালের সংস্কার কাজ চলছে। নতুন করে খাল যাতে দখল হয়ে না যায় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সাভারস্থ ট্যানারি শিল্প এলাকায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার স্থাপন যথাযথ হয়নি। এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভায় জানানো হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প কারখানা থেকে ১৫৪ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে সিমেন্ট কারখানা স্থাপন করায় নদী তীর যাতে দখল ও দূষণ না হয় সেজন্য উক্ত এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে সভা করতে হবে। নদী তীর দখল ও দূষণরোধে জেলা-প্রশাসকদের নিয়মিত মনিটরিং ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাবেশ করতে হবে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদৎ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: