যমুনায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৪২ পিএম

যমুনা নদীর টাঙ্গাইল অংশে বিভিন্ন পয়েণ্টে উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিন আগে বৃষ্টির কারণে পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত সাত দিনে নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে।

জেলার যমুনা তীরবর্তী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাহমুদ নগর ইউনিয়নের মাহমুদনগর, কুকুরিয়া, ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা, বরুহা, কুঠিবয়ড়া, জগৎপুরা, তারাই, বলরামপুরসহ বিভিন্ন পয়েণ্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যমুনা পাড়ের চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

যমুনায় পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন কবলিত এলাকা মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পরিদর্শন করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম।

এ সময় তিনি ভাঙন রোধে সদর উপজেলার মাহমুদ নগর ইউনিয়নের মাহমুদনগর গ্রাম, কুকুরিয়াসহ ভূঞাপুর উপজেলার কুঠিবয়ড়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাহমুদ নগর ইউনিয়নের কুকুরিয়া এলাকার মো. হানিফ বলেন, যমুনার আগ্রাসী থাবায় আমাদের বসত ভিটা, রাস্তা-ঘাট, মসজিদ নদী গর্ভে চলে গেছে। রাস্তার পাশে ছাউনি তুলে পরিবারের সদস্য নিয়ে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন তিনি। তার দাবি, সরকার যদি স্থায়ীভাবে বেড়িবাধ নির্মাণ করে দিত তাহলে আমাদের আর বাড়ি ছাড়তে হত না।

মো. আফছার মিয়া বলেন, বর্ষা এলেই প্রতিবছর ভাঙন দেখা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ দেওয়ার কারণে কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে বর্ষার আগে যদি সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে পানি বাড়ার সময় নদীতে ভাঙন দেখা দিবে না। আমাদেরও কোন ক্ষতি হবে না।

ভুঞাপুর উপজেলার কুঠি বয়ড়া এলাকার মো. হালিম সরকার বলেন, গত সাত দিনে যমুনা অনেক পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরকারের কাছে যমুনার পাড়ে স্থায়ী বেড়ীবাঁধের দাবি জানান তিনি।

একই এলকার মো. খলিল মিয়া বলেন, আমার ফসলি জমি ও ভিটে বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি।

মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিগ্রির চর গ্রামটি যমুনার পেটে চলে যাওয়ার কারণে আমি কুঠিবয়ড়া এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন কুঠিবয়ড়া বাজারও হুমকির মুখে রয়েছে। আমরা এখন কই গিয়ে আশ্রয় নিব।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম অ্যাডভোকেট বলেন, কয়েকদিন যাবৎ উপজেলার অর্জুনা, বরুহা, জগৎপুরা, তারাই, বলরামপুরসহ বিভিন্ন পয়েণ্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি গত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। যা ভাঙন রোধে কিছুটা হলেও কাজ করবে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, যমুনার টাঙ্গাইল অংশে পানি বিপদ সীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির গতি কম থাকায় আশা করছি পানি আর বৃদ্ধি পাবে না। জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন ঢাকা বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে এসেছি। ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিকভাবে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: