‘স্যার, আমার ঘাড়ে বিয়ের বোঝা নিতে চাই না’

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৪৯ পিএম

দুই বছর আগে বাবা মারা গেছেন। এখন মাথার উপর ছাতা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মা। কিন্তু,  মায়েরও ফুসফুসে পানি জমায় চিকিৎসা চলছে। এ কারণে মেয়ের কাছে না শুনে তার অমতেই বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন মা। আর বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে গিয়েছিল মেয়েটির।

এদিকে ১৭ বছর বয়সী ওই মেয়েটি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়। সে বড় হয়ে ভালো চাকরি করে মায়ের পাশে দাঁড়াতে চায়। তাই কোনো উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত, নিজেই থানায় গিয়ে বিয়ে বন্ধের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করে মেয়েটি। 

ভারতের হাওড়া দাশনগর থানা এলাকার কোনা ধাড়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।

ওই কিশোরী থানায় গিয়ে জানায়, স্যার, আমার ঘাড়ে বিয়ের বোঝা নিতে চাই না। বর্তমানে মা অসুস্থ, বাবাও মারা গেছে বছর দুয়েক হলো। আমার বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চাইছেন মা। কিন্তু, আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।

ওই কিশোরী আরও জানায়, বিয়ে হয়ে গেলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয় না। আমি চাই আরও পড়াশোনা করতে। ভালো একটা চাকরি করে মায়ের পাশে দাঁড়াব।

পুলিশ সূত্ত্রে জানা গেছে, ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরী থানায় পৌঁছে জানায়, ১৮ বছর না হওয়া সত্ত্বেও পরিবারের লোকজন তার বিয়ে ঠিক করেছেন। অথচ ওই মেয়েটি বিয়ে করতে চায় না। সে চায় পড়ালেখা করতে। ব্যস, এরপরই কিশোরীকে নিয়ে তার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।

পুলিশ অফিসাররা সেখানে গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় খবর ওই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর ত্রিলোকেশ মণ্ডলও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর সকলে মিলে ওই কিশোরীর মাকে বোঝান, আইনত ১৮ বছর বয়স না হলে মেয়েদের বিয়ে দেয়া যায় না।

তারা এটাও বোঝান যে, তার মেয়ে আরও লেখাপড়া করতে চায়। এ সময় উপস্থিত সকলের সামনে কাউন্সিলর ত্রিলোকেশ মণ্ডল ওই কিশোরীর মাকে কথা দেন, পরিবারটির পাশে দাঁড়াবেন তারা। 

তারা এও বলেন, সকলে মিলে ওই কিশোরী যাতে আবারও পড়াশোনা শুরু করতে পারে, তার দায়িত্ব নেবেন। এরপর মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ওই কিশোরীর মা।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: