শেখ হাসিনার প্রাক্তন দেহরক্ষী কার গুলিতে মারা গেলেন?

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:২৯ পিএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, মানুষের শেষ আশয়স্থলকেও দখলে নিয়েছেন শেখ হাসিনা বলে জনগণ বিশ্বাস করে। দেশ এখন আওয়ামী কু-রাজনীতির ঘোঁট পাকানো অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়েছে। এখন সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছা অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া ও বিচারিক কার্যক্রম চলে। ২১শে আগস্টের বোমা হামলা মামলা এটির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

আজ সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, কাহার আকন্দের দাখিলকৃত চার্জশিটের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, ২১ আগস্ট ২০০৪ হামলাকারী আসামিরা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর বাসা হতে গ্রেনেডগুলো সংগ্রহ করে তা পশ্চিম মেরুল বাড্ডায় মুফতি হান্নানের অফিসে নিয়ে আসে। অতঃপর সেখানে অপারেশনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত মিটিং করে। পরদিন ২১শে আগস্ট ২০০৪ সকালেই তারা অপারেশনস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সভাস্থলে পৌঁছে যায়।

দেশী-বিদেশী (এফবিআই) তদন্ত সংস্থা তথা এমন অপরাধ সম্পর্কিত সামরিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছিলেন যে, এমন নিখুঁত টাইমিং ও টার্গেট (ট্রাক-মঞ্চ পরিহার করে পরিচালিত) সফল হামলা অবশ্যই এ বিষয়ে প্রফেশনাল লোক তথা যথাযথ পূর্ব রিহার্সেল ছাড়া এককথায় অসম্ভব।

সঙ্গত কারণেই যদি বিশেষজ্ঞদের এই মতামত আমলে নেয়া হয় তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ায়? প্রশ্ন করেন রিজভী।

রিজভী দাবি করেন, সভাস্থলের নিরাপত্তা বিধানকারী পুলিশ না জানলেও পূর্ব রিহার্সেল করার মতো পর্যাপ্ত সময় আগে থেকেই হামলাকারীরা জানতো যে. মিটিংটা মুক্তাঙ্গনে নয়, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পার্টি অফিসের সামনেই হবে। সেইভাবেই তারা নিখুঁত প্রস্তুতি, অত:পর কার্য সম্পন্ন করে।

ঘটনা সংঘটনের পর শেখ হাসিনার স্থান ত্যাগ এবং তৎপরবর্তী প্রায় ঘন্টাকালব্যাপী হতাহতদের উদ্ধারপূর্বক হাসপাতালে প্রেরণ-এসময়কালে একমাত্র গ্রেনেড হামলা ছাড়া কোন গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, এমন কিছু সেসময়ের তদন্তে, জরুরি সরকারের আমলে তদন্তে, এমনকি ‘রঙতুলি দিয়ে সাজানো-রাঙানো’ এই কাহারীয় তদন্তেও কোন কর্মকর্তা দেখতে পাননি।

শেখ হাসিনার দেহরক্ষী মাহবুব কার গুলিতে মারা গেলেন ?

ওই দিনের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রিজভী প্রশ্ন করে বলেন, টিয়ার শেল বা রাবার বুলেটের যে ফায়ার করেছিল তার সবই হয়েছিল হতাহতদের স্থানান্তরের পর যখন উত্তেজিত নেতাকর্মীরা গাড়ি বা বিভিন্ন ভবনসমূহ ভাঙচুর তথা অগ্নিসংযোগ শুরু করেছিল তারপর থেকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- শেখ হাসিনার প্রাক্তন দেহরক্ষী প্রাক্তন সেনা হাবিলদার মাহবুব (২১ আগস্টের ঘটনায়) কার গুলিতে মারা গেলেন?-সেটা নিরূপণে এসপি কাহারের আগ্রহ কিংবা কোনো তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি কেন ?

আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাশের কাছ থেকেও চাঁদা চাইবে

ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, যুবলীগের মহানগরীর নেতারা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের ওপর চড়াও হয়েছে বিপুল অংকের চাঁদা আদায়ের জন্য। এই ঘটনা জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আর কিছুদিন পর হয়তো আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাশের কাছ থেকেও চাঁদা চাইবে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন-‘গণমাধ্যমের একাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচার করছে’। আমরা মনে করি অবিচার করছে না, বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর গুন্ডামি ও গোয়েন্দাগিরি সত্ত্বেও গণমাধ্যমের বিরাট অংশ সাহসের সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে। তবে ক্ষুদ্র একটি অংশ যে পা চাটছে ও সুবিধার ঝোল খাচ্ছে তা জনগণ দেখছে। সংবাদ মাধ্যমের গলায় দড়ি ঝোলাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের তৃপ্তি মিটছে না, তাই এখন গোটা গণমাধ্যমকেই পকেটে ঢোকানোর চেষ্টায় কিছুটা বেগ পাওয়াতে আফসোস করে নানা কথাবার্তা বলছেন।

রিজভী বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার প্রতি সরকারের আচরণের ঘটনাগুলো প্রকাশ হওয়ায় দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী বিমূঢ় বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতিকে যেভাবে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রীরা হুমকি, গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেছেন তাতে আওয়ামী রাজনীতির বিকৃত সংস্কৃতি আবারও জনগণের কাছে সুষ্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সূত্র:  যুগান্তর।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: