স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, এরপর...

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৩১ পিএম

ঝালকাঠির রাজাপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক বখাটে তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে একটি ঘরের ভেতর আটকে রাখে। আত্মীয়স্বজন ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সার্ভিস (ওসিসি) তে ভর্তি করে। রাজাপুর উপজেলার চাড়াখালী গ্রামে রবিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মেয়েটির বাবা ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। মা না থাকায় দাদা-দাদির সঙ্গেই বসবাস করে ছাত্রীটি। রবিবার সকালে দুসম্পর্কের চাচা সালাম (২২) এর সঙ্গে বেড়াতে পার্শ্ববতী পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিণপালা যায়। সেখান থেকে দুপুরে বাড়ি ফিরছিল ওই ছাত্রী ও চাচা। পশ্চিম চাড়াখালী এলাকায় আসলে চাচার কাছ থেকে জোর করে ওই ছাত্রীকে ছিনিয়ে নেয় স্থানীয় বখাটে হেলাল তালুকদার (২৮) ও তাঁর সহযোগিরা। এ সময় চাচাকে ভয় দেখিয়ে ছাত্রীকে স্থানীয় শাহ আলম কাজীর একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে হেলাল। ধর্ষণের পরে ছাত্রীটিকে পাশের মন্টু হাওলাদারের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। তারপরে ওই ছাত্রীর দাদাকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে হেলালের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। টাকা না দিলে ছাত্রীকে আটকে রাখা হবে বলে হুমকি দেয় হেলাল। ঘরের ভেতরে আটকে রাখা ছাত্রীকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণের চেষ্টা চালায় হেলালের সহযোগী স্থানীয় বাবুল তালুকদার। রাত ১২ টার দিকে রাজাপুর থানার পুলিশের সহযোগিতায় ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে উদ্ধার করে দাদা-দাদির কাছে ফিরিয়ে দেয় এলাকাবাসী। ধর্ষণ যন্ত্রনায় কাতর ছাত্রীকে সোমবার সকালে দাদা-দাদি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

নির্যাতিত ওই ছাত্রী জানায়, বখাটে হেলাল দীর্ঘ দিন ধরে তাকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্যক্ত করতো। রবিবার সকালে হরিণপালা পার্কে চাচার সঙ্গে ঘুরে বাড়িতে ফেরার পথে রাস্তা থেকে আমাকে তুলে নেয় হেলাল ও তার দলবল। একটি নির্জন ঘরের মধ্যে ধর্ষণ করার পরে অন্য একটি ঘরে আমাকে আটকে রাখে সে। চিৎকার করলে এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমাকে যে ঘরের ভেতরে আটকে রাখা হয়েছিল, সেখানে গিয়ে বাবুল নামে এক ব্যক্তিও আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। 

ছাত্রীর দাদা অভিযোগ করেন, আমার নাতিকে ধর্ষণের পরে আটকে রাখা হয়েছিল। আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চায় হেলাল। টাকা না দিলে আমার নাতিকে আটকে রাখা হবে বলে হুমকি দেয়। আমি স্থানীয়দের মাধ্যমে নাতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শান্তি নেই। হেলালের বাবা জাহাঙ্গীর তালুকদার লোকজন নিয়ে নাতিকে এখান থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। মামলা করতেও নিষেধ করেছে তারা। 

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বদরুদ্দুজা জোবায়ের বলেন, আমরা ছাত্রীটিকে ভর্তি করেছি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

রাজাপুর থানার ওসি শামসুল আরেফিন বলেন, ওই ছাত্রীর দাদা মৌখিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছে। তিনি অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সন্ধ্যায় আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে একটি গোপন সংবাদ পেয়েছি। সেখানে ৬টি মোটর সাইকেলে ১২ জনের একটি দল পাঠানো হয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: