দীর্ঘ ২২ বছর পর মা-মেয়ের দেখা
ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় হারিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ২২ বছর পর মা, ভাই, বোন সবার সাথে দেখা হয়েছে মেয়ের, কিন্তু ফিরে পেলেন না বাবাকে। মেয়েকে খুঁজতে খুঁজতে বাবা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার ৬ নম্বর চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের চর কালী বাড়ি গ্রামে।
দীর্ঘ ২২ বছর পর সন্তানকে পেয়ে দারুণ খুশি পরিবারের লোকজন। জাহানারাকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে আশে পাশের লোকজন।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে বনপলাশিয়া এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখে আব্দুল হাসেম মেয়েটিকে তার নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে, তার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি। পরে আব্দুল হাসেম তার বোন জামাই তারাকান্দা উপজেলার বালীজানা গ্রামের আলী আকবরের কাছে নিয়ে যায়। পরে আলী আকবর তার লালন পালনের দায় ভার গ্রহণ করেন।
জাহানারা আক্তারের পালিত মা হাজেরা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর আগে বনপলাশিয়া এলাকায় আমার ভাই আব্দুল হাসেম মেয়েটিকে ঘুরাঘুরি করতে দেখে। পরে তাকে ঠিকানা জিজ্ঞাস করলে সে তার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি। আমি তার লালন পালনের দায়ভার নিয়ে নতুন নাম দেই কামরুন্নাহার।
পরে আমরাও তার মা-বাবাকে খোঁজ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু তাদের পায়নি। আমরা মেয়েকে বাবা-মায়ের আদর দিয়ে বড় করে ২০০৪ সালে আমার দেবর আমীর হোসেনের ছেলে দুলাল মিয়ার সাথে বিয়ে দেই। এখন তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আজ মেয়ে তার প্রকৃত ঠিকানা খোঁজে পেয়েছে। মেয়ের সুখেই আমাদের সুখ। এই মেয়ে সবসময় আমাদের মেয়েই হয়ে থাকবে।
কিন্তু কামরুন্নাহার দীর্ঘ ২২ বছরেও তার মা-বাবাকে ভুলতে পারেনি। কামরুন্নাহার তার পরিবারে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক দিন কান্নাকাটি করত। মা-বাবার জন্য এমন কান্নাকাটি দেখে স্বামী দুলাল মিয়া কামরুন্নাহার ও তার তিন ছেলে-মেয়ের ছবি দিয়ে মা-বাবার সন্ধান চাই এমন পোষ্টার ছাপিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। এই পোষ্টার চর কালী বাড়ি এলাকাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়া হয়। ওই পোষ্টার দেখে মেয়েকে চিনতে পারে তার পরিবার।
জাহানারা আক্তারের মা মাজনী খাতুন বলেন, ২২ বছর আগে জাহানারা বাদাম খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে বাদাম ওয়ালার পিছু পিছু ছুটে যায়। পরে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। দীর্ঘ ২২টি বছর মেয়ের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসেছিলাম।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও এতদিন তার সন্ধান পায়নি। কয়েকদিন আগে সন্ধান চাই এমন একটি পোষ্টারে মেয়ের ছবি দেখতে পাই। পরে সন্ধান চাই পোষ্টারে দেয়া ঠিকানায় তারাকান্দা উপজেলার বালিজানা গ্রামে মেয়ের সন্ধান পাই।
পরে মেয়ে এবং তার পালিত মায়ের সাথে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হই কামরুন্নাহার আমাদের হারিয়ে যাওয়া জাহানারা। আজ মেয়েকে কাছে পেয়ে দীর্ঘ দিনের কষ্ট ভুলে গিয়েছি।
হারিয়ে যাওয়া তিন সন্তানের জননী কামরুন্নাহার জানান, ২২ বছর কান্নাকাটি করার পর আজ আল্লাহ আমার দিকে ফিরে তাকিয়েছে। আমি আমার মা, ভাই, বোন সবাইকে ফিরে পেলেও ফিরে পাইনি বাবাকে।
বিডি২৪লাইভ/এমকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: