দেরিতে বিয়ে হলে যেসব সমস্যায় ভোগেন নারীরা

প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০১৮, ০২:১৬ পিএম

সমাজে এখনও একজন নারীর শেষ গন্তব্য ও সাফল্য বিবেচনা করা হয় বিয়ে ও সংসারকেই। একটি নির্দিষ্ট বয়সের মাঝে বিয়ে না হলে বেশিরভাগ নারীই কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন।  এমনকি যারা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নারী, তাদের মাঝেও দেখা যায় কিছু কিছু ব্যাপার। কখনও কাজ করে ঈর্ষা, কখনও সামাজিক চাপ, কখনও একাকীত্ব। সব মিলিয়ে অনেকেই নিজের মাঝে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

জেনে নিন এমন কিছু সমস্যা সম্পর্কে, যেগুলো তৈরি হয় বিয়ে দেরিতে হলে। সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা গেলে সেটা থেকে বের হয়ে আসাও সহজ।

একাকীত্ব: সমবয়সী সকল বোন বা বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে, আর স্বভাবতই বিয়ের পর সকলেই নিজের পৃথিবী নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এক্ষেত্রে যার বিয়ে হয়নি, তিনি হয়ে পড়েন একলা। আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শূন্যতা। 

নিজেকে অযোগ্য মনে করা : সমবয়সী সকলে নিজের জীবন সঙ্গী পেয়ে গেছেন এমনটা ভেবে অনেকেই নিজেকে অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন।

ঈর্ষা হওয়া: এটাও খুব সাধারণ একটা আবেগ। আমরা মানুষ, এমনটা হতেই পারে আমাদের সাথে। খুব কাছের বোন বা বান্ধবীটি হয়তো এখন আর আপনাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না, নিজের সংসার নিয়েই ব্যস্ত ও সুখী। এমন অবস্থায় ঈর্ষার একটা বোধ খোঁচা দিতেই পারে আপনাকে। এক্ষেত্রে নিজেকে বিষয়টা বোঝান। প্রথমত এটা ভাবুন যে তার জীবনে মোটেও আপনার গুরুত্ব কমেনি। আর দ্বিতীয়ত, একদিন আপনারও এমন চমৎকার একজন জীবনসঙ্গী হবে, তাই মন খারাপের কিছুই নেই।

নিজেকে হাস্যকর করে ফেলা: অনেক নারীই এই কাজটি করে ফেলেন নিজের অজান্তেই। আর তা হল, একটি বিয়ে করার জন্য ডেস্পারেট হয়ে যান। ক্রমাগত সামাজিক ও পারিবারিক চাপ থেকে এটা হয়। মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে বয়স পার হয়ে যাচ্ছে! আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য আকুল হয়ে ওঠেন অনেকেই। বারবার ঘটকের কাছে যাওয়া, অফিসে বা পরিচিত মহলে নিজেকে পাত্রী হিসাবে উপস্থাপন ইত্যাদি করতে গিয়ে নিজেকে হাসি ও করুণার পাত্রে পরিণত করে ফেলেন তারা।

ভুল মানুষকে বেছে নেওয়া: ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক নারীই ভুল মানুষটিকে বেছে নেন বিয়ের জন্য। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, যাকে সামনে পেলাম, তাকেই বিয়ে করে ফেললাম।

কারও ভালো সহ্য করতে না পারা: এটাও একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। যখন বিয়ে না হবার কারণে একজন মানুষ ক্রমাগত হয়রানির শিকার হতে থাকেন। তখন স্বভাবতই তার মাঝে জন্ম নেয় ক্ষোভ ও ক্রোধ। আর এই ক্ষোভ ও ক্রোধের কারণেই বিবাহিত সকলকে মনে হতে থাকে শত্রু। নিজের অজান্তেই একজন খিটখিটে মানুষে পরিণত হয়ে যাই আমরা, যার কাছে পৃথিবীর কারও ভালোটা ভালো লাগে না। কারও সাফল্য বা সুখ সহ্য হয় না। এই ব্যাপারটা দূর করার জন্য কাউন্সিলিং ভালো কাজ দিতে পারে।

আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা: যে সমাজে একজন মেয়ের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের স্ট্যাটাসের ওপরে এবং সঠিক সময়ে বিয়ে না হলে মেয়েটি হয়ে ওঠে সকলের চক্ষুশূল, সেই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষেরাই বলতে থাকে যে তুমি এত অযোগ্য যে পাত্র জোটে না, তখন অনেক নারীই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন আর ক্রমশ গুটিয়ে নিতে থাকেন জীবন থেকে। ভুলেও এই কাজটি করবেন না। জীবন আপনার। আর আপনার জীবনে মাথা উঁচু করে আপনাকেই বাঁচতে হবে। একবার ঘাড় নুইয়ে ফেললেই পরাজিত আপনি।

প্রসঙ্গত, বলা হয়ে থাকে ৩০ এর মাঝেই নারী পুরুষ উভয়েরই বিয়ে করে ফেলা উচিত। তবে সেটা নারীদের ক্ষেত্রে আরও কিছুটা আগে হলে ভালো। মানব দেহের অনেক জটিলতা রয়েছে। মানব যৌবন বেশিদিন স্থায়ী হয় না এটা আমরা সবাই জানি। এ কারণে বিয়ে যদি দেরিতে করা হয় তাহলে নারী পুরুষ উভয়েরই কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া সামাজিক জটিলতা হয়েই থাকে। মেয়ের অনেক বয়স হয়ে যাচ্ছে এটা যেমন সমাজের চোখে একটু দৃষ্টিকটু ঠিক তেমনি বয়স্কা মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পেতেও বেশ জটিলতা তৈরি হয়।


বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: