১ কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গেছে

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৫৬ পিএম

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক থেকে এবার এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে গণনা শেষে বিপুল পরিমাণ দানের এই টাকার হিসাব পাওয়া যায়। বিপুল পরিমাণ এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ৭ ই জুলাই দান সিন্দুক খোলার পর ৮৮ লাখ ২৯ হাজার ১৭ টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ গত তিন মাস ৬ দিনে এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। সে হিসেবে এবার প্রতিদিন প্রায় এক লাখ ১৯ হাজার টাকা মসজিদটিতে মানুষ দান করেছেন।

এছাড়া গত ৩০শে মার্চ দান সিন্দুক খোলার পর ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এর আগে এ বছরের শুরুতে গত ৬ই জানুয়ারি মসজিদের ৫টি দানসিন্দুক খুলে গণনা করে সর্বোচ্চ এক কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। চার মাস ১০ দিনে তখন ওই টাকা দান হিসেবে পাওয়া গিয়েছিল। এর আগে গত বছরের ২৬ শে আগস্ট মসজিদের দানসিন্দুক খুলে গণনা করে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ১৫০জন ছাত্র শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।

&dquote;&dquote;

টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেটের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো: সাঈদ। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ টাকা গণনার কাজ পরিদর্শন করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজির হোসেন, খোদাদাদ, মীর তমাল ও সাগুফতা হক এবং সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্য সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঞা, বিডি টোয়েন্টিফোরলাইভডটকম এর কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মো. এস. হোসেন আকাশ, অনলাইন দৈনিক তোলপাড় এর ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মো: রকিবুল ইসলাম রনিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। টাকা গণনার এই এলাহী কান্ড নিজ চোখে অবলোকন করতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদে ছুটে যান।

প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্চা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

এ সময় ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী এলাকা থেকে খাশী দান করতে আসা মো. সোহাগ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি এবং আমার পরিবার আজ থেকে প্রায় ১৬ বছর আগে এই পাগলা মসজিদে একটি খাঁশি মান্নত ছিলো। আজ তা দিয়ে গেলাম।

&dquote;&dquote;

তিনি আরো বলেন, আমি শুনেছি এই মসজিদে যে কোনো বিষয়ে মান্নত করলে তা মনের ভাষনা পূরণ হয়। তাই তা করে গেলাম। এসময় তার সাথে ছিলো সাব্বির, মতিউর রহমান, শামীম, আওয়াল, মরিয়ম, আনোয়ারা বেগম ও সেলিনা।

জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে এ মসজিদটির অবস্থান। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ জানান, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে এবার এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ডলার, সিংগাপুরী ডলার, সৌদী রিয়াল, মালোয়েশিয়ান রিংগিট ভাল পরিমাণের স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দান বাক্সে জমা পড়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: