এই কবরে চির শায়িত হবেন আইয়ুব বাচ্চু

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৩৭ পিএম

কন্ঠশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু না ফেরার দেশে চলে গেছেন বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর)। আজ শনিবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রামে নানার বাড়িতে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে তাকে। ইতোমধ্যে তৈরি করা হচ্ছে বাচ্চুর শেষ ঠিকানা। নগরের স্টেশন রোডের বাইশ মহল্লা চৈতন্য গলির কবরস্থানে মায়ের কবরের বাম পাশে খোঁড়া হয়েছে তার জন্য সাড়ে তিন হাত মাটির কবর।

শনিবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাতটা থেকে কবর খোঁড়া শুরু করেন মো. জাফর (৬০), মো. সরওয়ার (৩০) ও ইমাম হোসেন (২০)।

ইমাম হোসেন বিডি২৪লাইভ ডটকমের কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মো: এস. হোসেন আকাশকে জানান, শহরের কুতুব মাওলানা নজির শাহ আল মাইজভাণ্ডারীর মাজারের উত্তরে মায়ের কবরের পাশে আইয়ুব বাচ্চুর কবরটি তৈরি করা হয়েছে। বেলে মাটি হওয়ায় অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে কবরটি খোঁড়া হয়েছে। এটি স্থানীয় ভাষায় সিন্দুক কবর। প্রায় ২ ঘণ্টা লেগেছে কবরটি খুঁড়তে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ছাত্র কাজী নাইম ইসলাম এসেছেন কবর খোঁড়া দেখতে। তার চোখে পানি। বললেন, বাচ্চু ভাইয়ের প্রথম অ্যালবামের ‘নদীর বুকে চাঁদ পড়েছে’ গানটি শুনে তার ভক্ত হয়ে যাই। এক আকাশের তারাসহ সব গানই আমার প্রিয়। তার অকালে চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া কঠিন।

মাজারের মোতাওয়াল্লি হাফেজ গোলাম রহমান জানান, আইযুব বাচ্চু মা পাগল ছেলে ছিল। প্রায়ই দেখতাম কবর জেয়ারত করতে আসছে। কবর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শ্রমিকদের টাকা-পয়সা দিত।

তিনি আরও বলেন, ‘এই আজ থেকে ১৫ দিন আগেও তিনি তার মায়ের কবর জিয়ারত করে গেছেন। কিন্তু এই ১৫দিন পর যে তিনি নিজেই লাশ হয়ে মায়ের কবরের পাশে শুইতে আসবেন তা কে জানতো। যাই হোক আল্লাহ যেন ওনাকে বেহেস্ত নসিব করেন’।

একদিকে যখন কবর খোঁড়া হচ্ছে অন্যদিকে মরদেহের ওপরে দেওয়ার জন্য বাঁশ-চাটাই সংগ্রহ করছিলেন মো. সেকান্দার মিয়া। তার কণ্ঠেও আফসোস, যে মানুষটা নিয়মিত মায়ের কবরে আসতেন জেয়ারত করতে তিনিই আজ শেষ ঠিকানা করে নিচ্ছেন সেখানে।

আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা, কবর, দাফন হচ্ছে চসিকের তত্ত্বাবধানে। সকাল থেকে স্টেশন রোড ও আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন করছেন ৩০ জন পরিচ্ছন্নকর্মী (সেবক)। বাচ্চু কত জনপ্রিয় তা বুঝেছি। জানাজা বিকেলে কিন্তু সকাল থেকে কবরস্থানে তরুণদের ভিড়।

বিকালে বাদ আসর জামিয়াতুল সালাহ মাঠে সর্বশেষ তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে তাকে।

৩৫ বছর আগে মাত্র ৬০০ টাকা পকেটে নিয়ে চট্টগ্রাম ছেড়েছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। আজ শেষবারের মতো সেই পুরনো ঠিকানায় ফিরছেন তিনি। আর কখনই চট্টগ্রাম ছাড়বেন না তিনি। যে শহরটার অলিগলিতে গিটার বাজিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন, সেই শহরেই আজ থেকে চিরস্থায়ী হবেন এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: