খাশোগির লাশ কোথায়?

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৩২ পিএম

ধস্তাধস্তিতে খাশোগি মারা গেছেন বলে সৌদি আরব যে দাবি করেছে তারা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছে তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস এন্ড ডেলেপমেন্ট-(একেপি) পার্টির মানবাধিকার শাখা। খবর তুর্কি গণমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলির।

খাশোগিকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন একেপির মানবাধিকার শাখার ডেপুটি চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘খাশোগি ধস্তাধস্তিতে মারা যাওয়ার বক্তব্যটি সঠিক নয়। তাদের আরও আগেই সঠিক ঘটনাটি প্রকাশ করা উচিত ছিল।’

খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার ১৭ দিনের মাথায় শুক্রবার সৌদি জানায়, তুরস্কের ইস্তাম্বুল কসন্যুলেটেই সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির দাবি, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে খাশোগির মৃত্যু হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান আহমদ আল আসিরি ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অন্যতম দেহরক্ষি সৌদ আল কাতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ১৮ জনকে।

এতোকিছুর পর এখন প্রশ্ন উঠছে- খাশোগির লাশ কোথায় গেল?

সৌদি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, জামাল খাশোগি চিৎকার শুরু করলে তার চিৎকার থামাতে গিয়ে মুখে কাপড় গুঁজে দেয়া হলে দম বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

তার লাশের বিষয়ে জানানো হয়েছিল, নিহত হওয়ার পর তার লাশ ইস্তাম্বুলে একজন তুর্কি নাগরিককে দেয়া হয়। লাশটি নিরাপদ স্থানে ফেলে দেয়ার শর্তে ওই তুর্কি নাগরিকের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল বলে দাবি করেছিল সৌদি সূত্র।

কিন্তু এমন তথ্য প্রকাশের মাত্র একদিন পর আবার নতুন তথ্য হাজির করেছে সৌদি সূত্র। ওই সূত্রটির বরাত দিয়ে মিডলইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এক দেহরক্ষী খাশোগির মরদেহ একটি ব্যক্তিগত বিমানে করে সৌদিতে নিয়ে গেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাহির আবদুল আজিজ মুতরিব নামের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে মরদেহ সরিয়ে নেয়ার সঙ্গে জড়িত। ধারণা করা হচ্ছে একটি বড় ব্যাগে করে তার মরদেহ কনসল্যুট থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাহির আবদুল আজিজ মুতরিব তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তার ব্যাগ পরীক্ষা করতে দেননি। এছাড়া ব্যক্তিগত ওই বিমানটির কোনও ফ্লাইট শিডিউল, বিমান এবং ফ্লাইটের কোনও তথ্যও তিনি বিমানবন্দরে দেননি। সূত্র বলছে, কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী মুতরিবকে বিমান বন্দরে খুব দ্রুত চলাচল করতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, খাশোগি গেলমাসে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে তুরস্কে আসেন এবং বিয়ে সপর্কিত কিছু কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য সৌদি আরবের ইস্তানবুল কনস্যুলেট অফিসে যান। কনস্যুলেট অফিস থেকে তাকে এক সপ্তাহ পরে আবার যেতে বলা হয়। তিনি ২ অক্টোবর দুপুর ১ টা ১৫ মিনিট এ কনস্যুলেট এ ঢুকেন কিন্তু আর বের হননি।

এর কয়েকঘন্টার মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায় এবং খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার হতে শুরু করে। এমনকি তাকে হত্যা করার পর তার দেহটাকে ১৫ টুকরা করা হয়েছে বলে তুরস্কের গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম ফলাও করে খবর প্রচার করতে থাকে।

তুরস্কের পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজ এবং অডিও রেকর্ড আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: