নয়াপল্টনে সংঘর্ষ, যা বলল বিএনপি

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:১০ পিএম

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ২টি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন বিএনপি বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা।

সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় সরকার ও পুলিশ সমানভাবে দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পুলিশ বিনা উসকানিতে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

আজ বুধবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে দলের কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ মন্তব্য করেন রিজভী।

রিজভী জানান, মনোনয়ন ফরম বিক্রির তৃতীয় দিন শান্তিপূর্ণভাবে কার্যক্রম চলছিল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস তার আসনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য হাজার হাজার কর্মী নিয়ে কার্যালয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ দলের নেতাকর্মীদের বাধা দেয় ও লাঠিচার্জ করে।

রিজভী বলেন, ‘বিনা উসকানিতে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। গুলি চালিয়েছে। বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সরকার ও পুলিশ উভয়ই সমানভাবে দায়ী।’

এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সরকারের উসকানিতে পা না দিতে আহ্বান জানান, বিএনপির এই নেতা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের ভাই। আপনাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো দ্বন্দ্ব নেই।’

রিজভী বলেন, আমরা শান্তির পক্ষে। এ আক্রমণের পরেও আমরা অশান্তির পথে হাঁটব না। সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দেব।

তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপনাদের শান্ত হতে বলেছেন। আপনারা রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে বসে পড়ুন। এটি তারেক রহমানের নির্দেশ।

অন্যদিকে, শান্তিপূর্ণ ভাবেই গত দুদিন ধরে বিএনপি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আসছে। আমরাও শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলাম। কোন ইস্যু না থাকায় ইস্যু তৈরির করার জন্যই এ কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, উভয়কেই শান্তিপূর্ণ অবস্থানের অনুরোধ করছি।

বুধবার ৩টার দিকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কোন উসকানি ছাড়াই হঠাৎ দায়িত্ব পালনরত পুলিশের উপর হামলা চালায় তারা (বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা)। এতে আমাদের ১৩ জন পুলিশ গুরতর আহন হয়। তারা এখন চিকিৎসাধীন।

মনিরুল বলেন, আচরণ বিধি লঙঘন করে একজন প্রার্থী শোডাউন দিচ্ছিল। তার কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। আমি উভয়কেই অনুরোধ করছি। সকলে আমাদের সহযোগিতা করুন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণের জান মালের নিরাপত্তার জন্য যা করার দরকার আমরা তা করবো বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, বুধবার বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বড় শোডাউন নিয়ে মনোনয়ন ফরম নিতে আসেন ঢাকা-৮ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস। এ কারণে আশেপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। যান চলাচল ঠিক করতে ওই শোডাউনে নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দুই কর্মীর ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে পুলিশ। মূলত
তারপর পরই সংঘর্ষ শুরু হয়।

এ ঘটনার পর নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও তাদের পাল্টা ধাওয়া করে লাঠিপেটা করে। নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও গুলি ছুঁড়ে পুলিশ। বিএনপির নেতাকর্মীরা এসময় পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। 

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: