সিলেটে লন্ডনি কইন্যা রুনির পরকীয়া ও বিয়ে

প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:১৫ এএম

বন্ধুর ভাই ছালেহ যখন লন্ডনি কইন্যা রুনিকে বিয়ে করে সেই বিয়েতে জমিয়ে হুই-হুল্লোড় করেছে সিলেটের যুবক শাহ লোকমান আলী। বন্ধুর পরিবারের সঙ্গে একীভূত হয়ে বিয়েতে বড় ভাইয়ের মতো দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতে 

সেই বন্ধুর ছোটো ভাইয়ের লন্ডনি স্ত্রী রুনিকে নিজের করে নিলেন লোকমান। বিষয়টি ঘুনাক্ষরেও টের পাননি ছালেহ আহমদ। এমন ঘটনা ঘটতে পারে সেটি তিনি স্বপ্নের কল্পনা করেননি। অথচ বাস্তবে তার জীবনে তাই হলো। আন্দাজ করতে পারেননি লন্ডনি স্ত্রীর বহুগামিতা ও বড় ভাইয়ের বন্ধুর প্রতারণা। যখন জানলেন তখন সব শেষ।

এই ঘটনায় বিপর্যস্ত ছালেহ আহমদ আদালতে স্ত্রী রুনি ও তার পরকীয়া প্রেমিক লোকমানকে আসামি করে মামলা করেছেন। পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করেও ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন। 

সিলেটের লন্ডনি পরিবারের সন্তান ছালেহ আহমদের বাড়ি বালাগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। তার লন্ডন প্রবাসী বড় ভাই সোহেল আহমদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শাহ লোকমান আলী। সে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার করিমপুরের শাহ মো. আহমদ আলীর ছেলে। বর্তমানে তারা অগ্রণী-১২০ শাহী ভিলা, লন্ডনি রোডের বাসিন্দা। আর লন্ডনি কইন্যা ফাতেমা বেগম রুনির বাড়ি ছাতকের নয়া রাজারগাঁও গ্রামে। তার পিতার নাম মিয়াজান আলী। রুনি পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন লন্ডনে। ওখানে তাদের প্রতিবেশী হচ্ছে ছালেহর ভাই সোহেল। ছোটো ভাই সালেহ’র জন্য লন্ডনে রুনির পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত করে সোহেল। এরপর ২০১৭ সালের ২৫শে জুলাই রুনিকে দেশে নিয়ে এসে ছালেহ’র সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে রুনির সঙ্গে লন্ডনে আরেক বাংলাদেশি যুবকের বিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেই বিয়েও টিকেনি রুনির। এরপর দেশে এনে ছালেহ্‌র সঙ্গে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। 

আর ওই বিয়েতে বড় ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শাহ লোকমান আলী বড় ভাইয়ের মতো দায়িত্ব পালন করেন। লোকমান বন্ধু সোহেলের পরিবারের ঘনিষ্ট। এ কারণে বিয়ের সব আয়োজনে ছিল লোকমানের সম্পৃক্ততা। সোহেলও বন্ধু লোকমানকে বিশ্বাস করতেন। এদিকে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর লন্ডন থেকে সিলেটে আসেন রুনি। স্বামী ছালেহর সঙ্গে উঠেন তাদের বাড়িতে। লোকমানও ওই বাড়িতে প্রতিদিনই যাতায়াত করতো। এমনকি ছালেহ ও রুনি বেড়াতে গেলেও তারা লোকমানকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। ১৪ই অক্টোবর পর্যন্ত দেশেই ছিলেন রুনি। সে সময় স্বামী ছালেহ্‌র সঙ্গে ভালোই চলে তাদের সংসার। রুনি লন্ডনে চলে যাওয়ার দুইদিন পর ছালেহের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে ডিভোর্স লেটার। চলতি বছরের ১লা জুলাই ইস্যু করা ওই ডিভোর্স লেটার হাতে পেয়ে হতবাক হয়ে যান ছালেহ। স্ত্রী রুনির সঙ্গে তার কোনো মনোমানিল্য নেই। দুইদিন আগে যাওয়ার সময় রুনি হাসিমুখে গেছে। ডিভোর্সের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি খোঁজ পান তারই পরিবারের ঘনিষ্ঠজন লোকমানের। 

খবর নিয়ে জানতে পারেন ওই ডিভোর্স লেটার লোকমানই পাঠিয়েছেন। এবং রুনির সঙ্গে লোকমানের বিয়ে হয়েছে মর্মে ১২ নং ওয়ার্ডের কাজী মাজেদ খান ওরফে হেলালীর করা একটি কাবিন করেছেন তারা। এসব বিষয় জানার পর বড় ভাইয়ের বন্ধু শাহ লোকমান আলীর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ছালেহ আহমদ ও তার পরিবারের লোকজন। এ সময় লোকমানও ঘটনার স্বীকার করে এবং রুনির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কয়েকটি ছবিও মোবাইলে দেখায়। ছালেহ আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ধূর্ত শাহ লোকমান আলী যেহেতু তার পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিল এ কারণে অগোচরে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এ কারণে রুনি লন্ডনে যাওয়ার দিন লোকমান সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ওই বিমানে ঢাকা পর্যন্ত রুনিকে এগিয়ে দিয়ে এসেছে। এবং ওই সময় সে রুনির সঙ্গে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলে। তিনি বলেন- লোকমানের কারণেই তার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে রুনি। এজন্য বিপুল অংকের টাকার লোভ দেখিয়েছে রুনির মা’কে। কিন্তু রুনি যে লোকমানের প্রতারণায় পড়েছে সেটি তারা বুঝতে পারছে না। আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠজন লোকমান যে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে সেটি সিলেটের কোনো ভদ্র পরিবার মেনে নিতে পারবে না। ছালেহ জানান- রুনির যখন ডিভোর্সের কথা বলা হয়েছে তখন রুনি লন্ডনে ছিল। আর লোকমানের সঙ্গে কাবিনের তারিখের দিন রুনি তার ঘরেই ছিল। ডিভোর্স ও কাবিন দু’টো লোকমানের সাজানো ঘটনা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

এদিকে- এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছালেহ আহমদ ২৫শে নভেম্বর সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতে শাহ লোকমান আলী, ফাতেমা বেগম রুনি, জগন্নাথপুর সৈয়দপুরের ছানী আহমদ, ছাতকের মামুন হোসেন, নগরীর পিরোজপুরের আবদুল মুকিত চৌধুরী ওরফে রেজা, আবদুল মনাফ, সেলিম মিয়া ও ১২ নং ওয়ার্ডের কাজী মাজেদ খান হেলালী সহ ৮ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন। মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। এ নিয়ে তিনি সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতারক লোকমানের বিচারও দাবি করেন।

এদিকে- রুনির সঙ্গে বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন শাহ মো. লোকমান আলী। তিনি জানিয়েছেন- ডিভোর্স হওয়ার পর রুনিকে তিনি বিয়ে করেছেন। তবে- ছালেহ মামলায় যে হুমকির অভিযোগ করেছেন সেটি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। ছালেহর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর থেকে রুনির সঙ্গে তার সম্পর্ক হয় বলে জানান লোকমান। সিলেট সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের কাজী মাজেদ খান হেলালী জানিয়েছেন- আমার সহকারী এই কাবিনটি করেছে। তালাকের কাগজ পেয়ে বিয়ের কাবিন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: