দায় কি শুধুই শিক্ষকদের?

প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৩২ পিএম

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রি আত্মহত্যার ঘটনায় মারাত্মক রকমের ব্লেইম গেইম চলছে গনমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে যে সব দায় শুধুই শিক্ষকদের? অভিভাবকদের কি কোন দায় নেই?

উক্ত ঘটনায় অরিত্রী আত্মহত্যা করার পেছনে অরিত্রীর বাবা মায়েরই যে কোন ভুমিকা ছিলনা তার গ্যারান্টি কি?

এমনও তো হতে পারে, স্কুল কতৃপক্ষ অরত্রীর বাবা মাকে ডেকে আনার পর বাসায় গিয়ে তার বাবা-মা মেয়ের উপর আরেক দফা নির্যাতন চালিয়েছিল যেটা মেনে নিতে পারছিলনা অরিত্রী!

একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষক যতই শাস্তি দিকনা কেন কোন শিক্ষার্থীই এতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে মনে হয়না। আর যদি এমনই হত তাহলে প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটত বলে মনে করি।

এমন সিদ্ধান্ত তখনই নেওয়া যায় যখন কাছের মানুষের কাছে ভরসার শেষ জায়গাটুকু কেউ খুঁজে না পায়।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পেছনে এমন কোন কারণ খোঁজাটা কি অযৌক্তিক কিছু!

যে দেশে জিপিএ ফাইভ না পাওয়ার কারণে স্কুল শিক্ষকদের ভয়ে ছাত্র ছাত্রীরা আত্মহত্যা করেনা, আত্মহত্যা করে অভিভাবকদের কারণে, সে দেশে আমি এক তরফা শিক্ষকদের উপর ব্লেইম দেওয়ার কখনোই পক্ষপাতী নই।

মনে আছে, চট্রগ্রামের পতেঙ্গা সী বীচে এক মেয়ে শিক্ষার্থীর মৃত দেহ পাওয়া নিয়ে কত রং ঢং মেখে নিউজ আসল বিভিন্ন মিডিয়ায়। কেউ কেউ তো বিনা ময়না তদন্ত ছাড়াই বলে দিল তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।

প্রকৃত ঘটনাটা পরবর্তীতে কতজন জানার চেষ্টা করেছেন জানিনা, তবে যতটুকু বিশ্বস্ত সুত্রে জেনেছি সেই মেয়েটিকে খুন করা হয়নি। সে আত্মহত্যা করেছিল। আর তার আত্মহত্যার পেছনে যদি কোন কারণ থাকে সেটা তার পরিবার!

আর এরমক বহু মাইনর বয়সের ছেলে মেয়েদের বা প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষদের আত্মহত্যার পেছনে শুধু একটি নির্দিষ্ট কারণ বা এক পক্ষই দায়ী এমন যুক্তিও আমি সব সময় মানতে রাজী নই। কারণ যে সমাজে আমরা বাস করি, আমাদের আশেপাশে যারা থাকে তাঁরাই এক সময় অরিত্রীর মত শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা পেলে চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে জীবন বিষিয়ে তুলবে।

আর এমন একটি সমাজ ব্যবস্থায় যখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায় তখন সবাই কত সচেতন নাগরিকের পরিচয় দেয়, কত সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দেয়। নিজেরদের ব্যার্থতা কি সুন্দর অন্যের উপর চাপিয়ে দেই। অথচ এরকম মুহুর্তে একজন বাব মায়েরই সবচেয়ে ভালো জানা উচিৎ তার সন্তানের মানসিক অবস্থার কথা। তারা যদি সত্যিকার অর্থেই সচেতন হতেন, সতর্ক থাকতেন তাহলে এমন ঘটনা আমাদের দেখতে হতনা।

(লেখাটা একান্তই ব্যাক্তিগত মতামত। লেখাটুকু কারো মনে আঘাত করে থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি)

সালেহ ইমরানের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

খোলা কলামে প্রকাশিত লেখার সাথে প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পর্ক নেই। এটা লেখকের একান্ত মতামত।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: