হাল ছাড়ছে না আ’লীগের বিদ্রোহীরা

প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৫৫ পিএম

শিমুল বারী: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্রেহী প্রার্থী দমনে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি করছে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড। তবে শেষ পর্যন্ত সকল বিদ্রোহী প্রার্থী মহাজোট মনোনীত প্রার্থীর হয়ে মাঠে নামবেন বলেও দাবি করছে তারা কিন্তু মাঠ পর্যায়ের দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। কারণ বিদ্রোহীরাও রয়েছে শক্ত অবস্থানে। দল তাদের মনোনয়ন না দিলেও নির্বাচন করবেন তারা। 

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের শান্ত করতে খোলা চিঠি দিয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। খোলা চিঠিতে তিনি বলেন, আপনার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে আপনার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে মহাজোট প্রার্থীকে বিজয় করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। আপনার ত্যাগ, শ্রম ও আন্তরিকা সব কিছু আমার বিবেচনায় আছে। আমি নিশ্চিত আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের বিজয় রথ থামাতে পারবে না ইনশাল্লাহ। নৌকাকে পরাজিত করার সাংগঠনিক শক্তি কারও নেই। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোলা চিঠিতে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে বিদ্রোহীদের কাজ করারও আহ্বান জানান। 

ধানমন্ডিস্থ দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক আজও (৮ ডিসেম্বর) মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থীদের সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, সভানেত্রীর নির্দেশে আমি দলের মনোনয়ন বঞ্চিতদের সঙ্গে কথা বলেছি। বঞ্চিত প্রার্থীরা ইতোমধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিছু আসনে এখনও রয়ে গেছে, তারাও রবিবারের মধ্যে প্রত্যাহার করে নিবেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮৯ জন প্রার্থী দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ভুলত্রুটির জন্য অনেকের মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মনোনয়ন বাতিল হওয়া অনেক প্রার্থীর অভিযোগ, তুচ্ছ ঘটনার জন্য তাদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল করা হয়েছে। যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়নি তাদের ২৬-২৭ জনকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করছে আওয়ামী লীগ। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও ৩০ জনের উপরে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তারা যেকোন মূল্যে নির্বাচনে অশংগ্রহণের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অবিচল রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) আওয়মী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মহাজোটের মাঝে এখনও বেশ কিছু আসন নিয়ে সমস্যা রয়েছে। অন্যদিকে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত অংশরাও চিন্তার কারণ। তবে আশা করছি ৯ ডিসেম্বরের পর আর বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না। তবে যারা হবেন তারা চির জীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার হবেন। আর দলে ফিরতে পারবে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই নির্বাচনে আমারেদ বিজয়ী হতে হবে, নয় তো ২০০১ সালের ন্যায় রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে। অতএব এবার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কোন সুযোগ নেই। দলকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমাদের অস্তিত্বের জন্য আওয়ামী লীগে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী বিডি২৪লাইভের এ প্রতিবেদককে বলেন, দল যদি মনে করে তাদের চাপে আমরা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিব। তবে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী নিশ্চিত পরাজয় বরণ করবে। দলের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছি, বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছি অথচ দলে বহু দুর্নীতিবাজ এমপি ও অনেক অথিতি পাখিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। অথচ সারাজীবন দলের জন্য কাজ করেও মনোনয়ন পাইনি। আমি কী দলের জন্য কিছুই করিনি? অযোগ্য হলে একটা কথা ছিল। আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করছি না বরং আমি বিদ্রোহী হলেও বিজয়ী হব। তাই আমি নির্বাচন করব।

বিডি২৪লাইভ/এসবি/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: