বিএনপির মনোনয়ন কার্যক্রম বন্ধ

প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:১৭ পিএম

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়টির মূল ফটকের বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

শেষ খবর পর্যন্ত পাওয়া পর্যন্ত সমর্থকদের হামলার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত মনোনয়ন সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে।

শনিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হামলা চালানোর পর মাইকে ঘোষণা দিয়ে এ মনোনয়ন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

তবে কখন আবার এ কার্যক্রম শুরু হতে পারে, তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না নেতারা। ফলে যারা চূড়ান্ত মনোনয়ন নিতে পারেননি, তারা বেকায়দায় পড়েছেন।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে গুলশান কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন কর্মী-সমর্থকরা। এসময় কার্যালয়ের ভেতর থেকে তাদের শান্ত হতে বার বার মাইকিং করা হয়। কার্যালয়ের বাইরে রয়েছেন প্রায় ছয়শ নেতাকর্মী।

রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের এই বিক্ষোভ চলছিল। অনেকেই ফটকের সামনে শুয়ে বিক্ষোভ করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন বঞ্চিত চাঁদপুর-১ আসনের সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন, নায়ারগঞ্জ- ১ আসনের অ্যাভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিমের কর্মী-সমর্থকরা এ হামলা চালাচ্ছেন। তারা কার্যালয়ের বাইরে থেকে ভেতরে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। এ সময় বাহিরে বিক্ষুব্ধরা মিছিল। থেমে থেমে ইট পাটকেল ছুড়ে মারছেন এবং গেটে লাথি মারছে।

বিএনপি নেতা এহছানুল হক মিলন, তৈমুর আলম খন্দকার ও সেলিমুজ্জামান সেলিমের অনুসারী কর্মী-সমর্থকেরা গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে লাথি মারেন, ধাক্কা দেন, ইট-পাটকেল ছুড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই বিক্ষোভ চলছিল। অনেকেই ফটকের সামনে শুয়ে বিক্ষোভ করছেন।

জানা গেছে, শেরপুর-২ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত ফাহিম চৌধুরী, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান, চাঁদপুর-১ আসনের আ ন ম এহসানুল হক মিলনের সমর্থকেরা এ হামলা চালায়। তারা ধানের শীষের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী বলেন, আমরা আন্দোলন এবং প্রতিবাদের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। কিন্তু কোনও উপায় না পেয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ণ করতেই সরকারি দলের লোকেরা এ হামলা চালাচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

গতকাল শুক্রবার রাতেও হট্টগোল করেন কয়েকজন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকরা। মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন অনেকে। এ সময় সরগরম হয়ে উঠে বিএনপি কার্যালয়।

এর আগে দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন এবং তার স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবীকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তাদের অনুসারীরা নয়াপল্টনে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বেলা ১২ টার পর এহসানুল হক মিলনের সমর্থকরা নয়াপল্টন কার্যালয়ে এসে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং সেখানে বিক্ষোভ শুরু করে। এদের নেতৃত্ব দেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আবেদীন স্বপন।


বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: