বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:১৪ এএম

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলা বিএনপির কার্যালয়ের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পর তাতে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই সময় কার্যালয়ে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী ছিলেন না।

এ বিষয়ে জানতে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়দের ধারণা, গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতায় পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রশিদ সরকার এবার দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নেন। ফলে ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়বেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকরাই এ আগুন লাগাতে পারে।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি ইনচার্জ মো. আব্দুল বাতেন জানান, বিএনপি অফিসে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসোটাসহ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। তারা আসবাবপত্র ভাংচুরের পর তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আগুনে প্লাস্টিকের বেশ কয়েকটি চেয়ার পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভায়।

জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আব্দুল মান্নান অভিযোগ করেছেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রশিদ সরকার দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেয়ায় ধানের শীষ নিয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন। এর জেরে বিএনপি অফিসে আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা।

উল্লেখ্য, এর আগে রাজধানীর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে নেতাকর্মী-সমর্থকরা মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষোভ করে। এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

সবশেষ পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে চূড়ান্ত মনোনয়ন সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দলটি।

শরিকদের পাশাপাশি বিএনপির একাধিক নেতাও আজ ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন পান। রাত সোয়া ৮টার দিকে ঘোষণা আসে, আজ আর চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে না। আগামীকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে ফের আসনসহ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

এদিকে, মনোনয়ন না পেয়ে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সমর্থকরা। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার, গোপালগঞ্জের সেলিমুজ্জামান সেলিম, ঢাকা-১২ আসনের আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও শেরপুরের নালিতাবাড়ীর একটা আসনের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকরা বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালান।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কার্যালয়ের সামনে এসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

এর আগে দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এহসানুল হক মিলনের পক্ষে স্লোগান এবং বিক্ষোভ করেন তার সমর্থকরা। পরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে বন্ধ করে দেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর গেট খুলে দিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে তার সমর্থকরা গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যায়।

শনিবার রাত ৮টার দিকে পটুয়াখালী-৩ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাসান মামুনের সমর্থকরা নয়াপল্টন কার্যালয়ে তালা মারেন। এ আসন থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: