মাঠ ছাড়বো না

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৪ এএম

এমএ বাছিত, নবীগঞ্জ থেকে: আগামী ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) নির্বাচনী এলাকায় কৌশলে এগুচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রতীক বরাদ্দের পর দু’দফা নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করেন ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলী গণসংযোগের দাবি করেন তিনি। গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. রেজা বলেন, গণগ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে লাভ হবে না।

প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ যাই করুক মাঠ ছাড়বো না। যেকোনো মুহূর্তে বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেব। ১০ই ডিসেম্বর এবং ১৫ই ডিসেম্বর নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় আয়োজিত পথসভায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষে সমর্থনে মাইকিং হচ্ছে।

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণায় অংশ নিতে তিনি ঢাকায় যান।

দু’একদিনের মধ্যে এলাকায় আসবেন এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঢাকায় যাবেন না। তবে, নির্বাচনী মাঠে বিরামহীন প্রচারণা ও গণসংযোগে অংশ নিয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী। প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনী প্রচারণায় কখনো বাধা দেয়া হয়নি। অহেতুক কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ওদিকে, ড. রেজা বলেছেন, তার নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষের গণজোয়ার ঠেকাতে গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এনিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তবে, প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজীর তরফ থেকে আতঙ্ককে গুজব হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকাকে সম্প্রীতির জনপদ আখ্যা দিয়ে অপ-প্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, পুলিশ অতিউৎসাহী হয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করলে দলীয় প্রার্থীর ক্ষতি হবে। তারা নির্বাচনী এলাকাকে সম্প্রীতির জনপদ হিসেবে অভিহিত করেন।

রাজনৈতিক ও দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনটি সিলেট বিভাগের মধ্যে আলোচিত আসন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখানে অংশ নিচ্ছেন সাবেক দুই প্রয়াত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শাহ এএসএম কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া (ধানের শীষ) এবং দেওয়ান ফরিদ গাজীর পুত্র শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী (নৌকা)। দু’জন একই ইউনিয়নের (দেবপাড়া) বাসিন্দা। ড. রেজার পিতা প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যার বিচার নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ড. রেজা কিবরিয়া বিশ্ববরেণ্য আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগ দেন। তাকে সংগঠনের নীতি নির্ধারণী পদ দেয়া হয়। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি।

নির্বাচনী গণসংযোগ ও এলাকায় অবস্থান বিষয়ে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, পুলিশ অহেতুক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তাদের কবল থেকে ১৬ বছরের শিশুও রক্ষা পাচ্ছে না।

এজন্য কৌশলে নির্বাচনী গণসংযোগ করছি। আমি আতঙ্কিত নই। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী মাঠ ছাড়বো না। ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার জন্য ঢাকায় গেছি। দলের নীতি নির্ধারক হিসেবে আমাকে প্রায়ই ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের ডাকে সাড়া দিতে হয়। নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার জন্যই কোনো সিডিউল দিয়ে গণসংযোগ করবো না। নির্বাচনের মাঠে আছি, যাই হোক মাঠ ছাড়বো না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাতের সঙ্গে কথা হয়েছে, আবারো কথা হবে। তার কাছে যাব। তিনি নির্বাচনে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কৌশলের অংশ হিসেবে অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না। ৩০শে ডিসেম্বর চমক দেখাবে ঐক্যফ্রন্ট। ইনশাল্লাহ অবশ্যই ধানের শীষ প্রতীক বিজয়ী হবে।

থানার ওসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তরফ থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ বা পথসভার জন্য কখনো কোনো আবেদন দেয়া হয়নি। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীকে কোথাও বাধা দেয়া হয়নি। নিয়মিত মামলা ছাড়া কাউতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। পুলিশের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাঝে মাধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হলেও তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অহেতুক কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: