বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট: ইশতেহারে মিল ও অমিল

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৩ পিএম

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিএনপি মহাসচিবকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধের বিচার অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করলেও, তারা কেন বিষয়টি রাখেননি।

এসময় প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুধু বলেছেন - পরে ওয়েবসাইটে ইশতেহারের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। 

ঢাকার সিনিয়র সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, জামায়াতের কথা বিবেচনা করেই বিএনপি যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।

ওই প্রতিবেদনে আরও তুলে ধরা হয়- নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াতের ইসলামী দল হিসাবে নির্বাচন করতে না পারলেও বিশ জনেরও বেশি জামায়াতের নেতা-কর্মী বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন।

যুদ্ধাপরাধের ইস্যুটি উহ্য রাখার রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির অংক কী দাঁড়াতে পারে বিএনপির জন্য?

মি. আহমেদ বলেন, বিএনপি নি:সন্দেহে ভোটের অংক বিবেচনা করেছে, তবে সেই বিবেচনায় ঝুঁকিও রয়েছে।

‘এটা ঠিক যে জামায়াতে ইসলামী চার থেকে পাঁচ শতাংশ ভোট নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বাংলাদেশে সুইং ভোটারের সংখ্যাও অনেক, প্রায় ১৫ শতাংশ। প্রচুর নতুন ভোটার এবার, দলগুলো তাদের দলে টানার চেষ্টা করছে। এই তরুণদের বড় একটি অংশ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত।’

যুদ্ধাপরাধের ইস্যুটি ছাড়া ঐক্যফ্রন্ট এবং শরিক বিএনপির প্রধান প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে অনেক মিল।

রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেখে মনে হয় ইশতেহার তৈরিতে তাদের মধ্যে সমন্বয় ছিল। ‘নির্বাচনে জিতলে রাষ্ট্রকে মেরামত করার যে সব কর্মসূচি দুটো আলাদা ইশতেহারে তুলে ধরা হয়েছে, তা প্রায় একইরকম।’

দুটোতেই প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথা রয়েছে, দু-দফার বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার কথা রয়েছে এবং সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা রয়েছে।

তবে তাদের ইশতেহারের মুখবন্ধে বিএনপি তাদের কারারুদ্ধ নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তার নির্বাসিত পুত্র তারেক রহমানকে যতটা তুলে ধরেছে, তুলনায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছিল কার্যত নিশ্চুপ। তারেক রহমানের প্রসঙ্গই তারা তোলেনি।

বিএনপি ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বলেছে, তাদের ভোট খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ‘সম্মান ও মর্যাদা’ প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরী।

‘আপনাদের একটি ভোট আমাদের নেত্রীর জীবনকে পুনরায় আলোয় উদ্ভাসিত করবে’ - বলা হয় এতে।

অন্যদিকে সোমবার ইশতেহার ঘোষণার সময় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা শুধু বলেন, তাদের ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে পাঁচ-দফা। পাঁচ দফার মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তির কথা রয়েছে।

কেন জোটের প্রধান শরিক হয়েও বিএনপি আলাদাভাবে ইশতেহার দিল?

বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা এ প্রশ্নের জবাবে বলেন - বিএনপি দেশের একটি বড় দল, সুতরাং তাদের বক্তব্যকে পৃথকভাবে তুলে ধরা জরুরী বলে দল মনে করে।

রিয়াজউদ্দিন আহমেদও মনে করেন, জোটবদ্ধ হলেও নিজেদেরকে ‘পৃথক এবং একক সত্ত্বা’ তুলে ধরার চেষ্টা করেছে বিএনপি। ‘তাছাড়া, বিএনপির সবকিছুতেই ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সায় নেই।’

বিশেষ করে জামায়াত প্রশ্নে বিএনপির সাথে ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিকদের মৌলিক মতভেদ রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: