‘এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি’

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৩৮ পিএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যারা বন্দুক পিস্তল দিয়ে গুলি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের ধমিয়ে রাখতে পারেনি, এই জালিম সরকারও পারবে না। মানুষ জেগে উঠেছে। তাই এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি।’ 

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী কারারন্তরীণ মনিরুল হক চৌধুরীর সমর্থনে সোয়াগাজী ফুলতলী মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে আর মানুষ চায় না। তারা দেশ ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অসংখ্য মানুষ গুম হয়ে আছে। দেশে আজ হাহাকার। কারো মা, বাবা, ভাই, বোন কেড়ে নিয়েছে। মনিরুল হক চৌধুরী, আব্দুল গফুর ভুইয়া, মোবাশ্বের হোসেনের কী অপরাধ? আজ তারা জেলে। মানুষ এই জালিম সরকার থেকে পরিত্রাণ চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, হাজার মানুষের চোখের জলে ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আপনাদের মতো এই রকম অনেক যুবক আছে, যারা ঢাকায় রিকশা চালায়। তাদের জীবনের স্বপ্ন আজ শেষ। সবকিছু ছারখার হয়ে গিয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২৭ ডিসেম্বরের পর বিএনপি নেতাকর্মীকে এলাকা থাকতে দিবেন না, এটা বলার আপনি কে? আপনি কি জমিদার। এই দেশ ও মাটি আমাদের সকলের। আমরা সবাই থাকব। ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাকে বিতাড়িত করা হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সবাই এক হয়েছি, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমরা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে দেব। যতই ভয় দেখাক না কেন, কোন কাজ হবে না। ধানের শীষ জয়ী করতে না পারলে আমরা কেউ বের হতে পারব না। গণতন্ত্রের মাথা মুক্ত হবে না। সাহস করে দাঁড়াতে হবে। কেন আমরা ভয় করব, মুক্তিযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করেছি। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানুষের কাছে যাবেন, ভোট চাইবেন।

বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ধানের শীষে একটি ভোট ভিক্ষা চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ যদি জেগে উঠে, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর কোন শক্তি নাই রক্ষা করবে।

তিনি বলেন, আপনারা এত উন্নয়ন উন্নয়ন করেন, আপনারা নিজেদের উন্নয়ন করেছেন, তাই তো এত ভয়। ব্যাংক শেয়ার বাজার লুট করেছেন, মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছেন। কোথায় কতটা বাড়ি তৈরি করেছেন, কানাডা, মালয়শিয়া, যুক্তরাষ্ট্রে তা জনগণের জানা আছে। আমরা মানুষের মুক্তি চাই, গণতন্ত্রের মুক্তি চাই। নব্য স্বৈরাচারের হাতে আর এ দেশকে ছেড়ে দেয়া হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় গেলে আমরা মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করব। কৃষক ভাইয়েরা তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। শ্রমিকরা তাদের শ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন। বেকারদের ভাতা দেয়া হবে। তিনি বলেন, আ’লীগ বলেছিল, ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে, এখন ৮০ টাকার নিচে চাল নেই।

মির্জা ফখরুল নাঙ্গলকোটের ওসি নজরুল হককে সরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কিছু বললে তারা বলে আমরা অসহায়। একজন কমিশনার বললেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, আর সিইসি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে, একজন জেলে, আরেকজন পুলিশ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালায়। আসলে এরা বধির। মানুষের জন্য তাদের মন কাঁদে না।

জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, মনিরুল হক চৌধুরীর মেয়ে সায়মা চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা খান সফরী, মো: সালাহ্উদ্দিন ভুইয়া শিশির ও বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ/এএফকে/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: