‘যত্ন করে নিজের জায়গাটা ধরে রাখার চেষ্টা করি’

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৫৯ পিএম

গানের জগতে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় ইমরান মাহমুদুল। যিনি একাধারে সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালক। শ্রোতাপ্রিয় কিছু গান দিয়ে জয় করে নিয়েছেন দর্শক হৃদয়। একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। গানের বাজার এবং বাণিজ্যের জনপ্রিয়তায় তিনি এখন রয়েছেন শীর্ষ সারিতে। নিজের ক্যারিয়ার, ব্যস্ততা ও নতুন বছরের পরিকল্পনা নিয়ে বিডি২৪ লাইভের বিনোদন বিভাগে কথা বলেন তিনি। তার আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

বিডি২৪ লাইভ: বিদায় নিচ্ছে '১৮ সাল। বছর শেষে সবারই কিছু না কিছু প্রাপ্তি থাকে। এ বছরে আপনার প্রাপ্তিগুলো জানতে চাই...
ইমরান: আলহামদুলিল্লাহ! এই বছরটা অনেক ভালো কেটেছে। অডিও ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছি। সেগুলোর মধ্য থেকে ‘এমন একটা তুমি চাই’ এবং ‘ইশশ’ এই দুইটা গানে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি এবং একটা কাভার সং হিসেবে করেছিলাম আমাদের সবার পছন্দ সালমান শাহকে নিয়ে। উনার সিনেমার ‘এই জীবনে যারে চেয়েছি’ গানটিকে নতুন করে করেছিলাম। এই গানটিও ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। আর ফিল্মের ক্ষেত্রে যদি বলি বেশ কয়েকটি ফিল্মের কাজ করেছি তার মধ্যে ‘পোড়ামন-টু’ এবং ‘দহন’ সিনেমা অন্যতম। ‘পোড়ামন টু’ ছবির ‘ও হে শ্যাম’ আর ‘দহন’ ছবির ‘প্রেমের বাক্স’ গানগুলো অলরেডি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়ে গেছে।

এছাড়াও যদি বলি আরও কিছু গান রয়েছে এ বছরের যেগুলো থেকেও প্রশংসা পেয়েছি। এর মধ্যে ‘আমার এ মন’, ‘মেঘের ডানা’, ‘হার কেন মেনে নেব’ এবং সর্বশেষ বিজয়ের মাসে প্রকাশিত হওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি উল্লেখযোগ্য। সবকিছু মিলিয়ে এ বছরটাকে মিস করব। খুবই ভালো কেটেছে আমার।

বিডি২৪ লাইভ: প্রাপ্তি শেষে কিছু অপ্রাপ্তি তো থেকেই যায়। অপ্রাপ্তির খাতায় কোনটি আছে?
ইমরান: সেটা সবারই থাকে। তবে আমার অপ্রাপ্তির কথা যদি বলি তবে বলবো আমার বাবার কথা। আমার বাবাকে খুব মিস করি। বাবাকে হারিয়ে আমি ভীষণ একা হয়ে পড়েছি। আমার বাবা ছিলেন আমার বন্ধুর মত। প্রতিটা মূহুর্ত বাবাকে খুব মিস করি। বাবার স্নেহ আর ভালোবাসাটাকে খুবই মিস করি।

বিডি২৪ লাইভ: ক'দিন বাদেই আসছে নতুন বছর। পুরাতনকে ভুলে আমরা নতুনকে স্বাগত জানাই প্রতিবারই। তো নতুন বছর নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?
ইমরান: আগামী রোজা পর্যন্ত প্রজেক্ট রেডি করা আছে। কিছু মিউজিক ভিডিওর কাজও শেষ হয়েছে এরই মধ্যে। নতুন বছরের শুরুর দিক থেকে এক এক করে গানগুলো প্রকাশ করবো। এর পাশাপাশি ‘ইমরান মাহমুদুল’ নামে আমার যে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলটা আছে সেটাকে গোছাবো। আর চ্যানেল আইয়ের ‘গানের রাজা’ অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছি এখন এটার কাজটা সুন্দরভাবে শেষ করবো। এখন পর্যন্ত এতটুকুই পরিকল্পনা করেছি। আর এর মধ্যে অডিও, ফিল্ম, স্টেজ শো এগুলো নিয়ে ব্যস্ততা তো থাকবেই।

বিডি২৪ লাইভ: ‘গানের রাজা’ অনুষ্ঠানে বিচারকের আসনে বসেছেন। জাজমেন্ট এর দায়িত্বটাতো কঠিন। আপনার কাছে সেটা কেমন মনে হচ্ছে? আর সেটাকে কিভাবে উপভোগ করছেন?
ইমরান: এর আগে আমি কখনো বিচারক হিসেবে কাজ করিনি। তবে ২০১০ সালে ‘ক্ষুদে গানরাজ’ অনুষ্ঠানে গ্রুমার হিসেবে ছিলাম। এই ‘গানের রাজা’ অনুষ্ঠানটা বাচ্চাদের গানের প্রতিযোগিতার একটা সুন্দর প্লাটফর্ম। এখানে বিচারক হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আর এই অভিজ্ঞতাটা আমার জন্য একদমই নতুন এবং আমি প্রথমবারের মত বিচারকের দায়িত্ব পালন করছি এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে। আর বিচারকের জায়গা থেকে খুবই দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করতে হয়। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর বাচ্চারা গান করছে, ভালো গান করছে। আজকের এই বাচ্চারাই আগামীতে ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরবে। আগামীর দিনের যারা ভবিষ্যৎ তারাই বাংলা সঙ্গীতাঙ্গনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমন যোগ্য কাউকেই খুঁজে বের করবো ইনশাহআল্লাহ।

বিডি২৪ লাইভ: এ বছরটায় মনে রাখার মত কোন একটা স্মৃতি আছে কি?
ইমরান: সত্যি কথা বলতে জীবনে অনেক কিছুই তো ঘটে। তবে এই বছরটাই মনে রাখার মত তেমন কোন স্মৃতি খুঁজে পাইনি আসলে। তবে আমার বাবার কথা বেশি মনে পড়ে।

বিডি২৪ লাইভ: এই বছর মোট কতগুলো গান প্রকাশিত হয়েছে আপনার?
ইমরান: এ বছর আমার অনেকগুলো গানই প্রকাশ হয়েছে। ভিডিও চারটা গান। এর মধ্যে রয়েছে ‘এমন একটা তুমি চাই’,‘আমার এ মন’, ‘ইশশ’,'মেঘের ডানা’। আর একটা কাভার গান ‘এ জীবনে যারে চেয়েছি’ এবং অডিও একটা ‘যদি হাতটা ধরো’। আর ফিল্মে তিনটা গান প্রকাশ হয়েছে। ‘পোড়ামন ২’ ছবির ‘ও হে শ্যাম’, ‘দহন’ ছবির ‘প্রেমের বাক্স’ আর কলকাতার ‘আমি শুধু তোর হলাম’ ছবির ‘মন বলেছে’ উল্লেখযোগ্য।

বিডি২৪ লাইভ: সিনেমা নাকি সিঙ্গেল ট্র্যাক, কোন গানগুলো থেকে আপনি বেশী সাড়া পান বলে মনে করেন? আর এর জন্য কোন বিষয়টা ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন?
ইমরান: অডিও আর প্লে-ব্যাক অর্থাৎ ফিল্মের গান দুটি আলাদা বিষয়। আমার কাছে মনে হয় ফিল্মের চেয়ে অডিও গানে বেশী সাড়া পাওয়া যায়। আমার ‘এমন একটা তুমি চাই’ গানটা আমি সব জায়গাতেই শুনতে পেয়েছি। আমি যখন দেশের সব জায়গাতে শো করতে চাই সেখানে আমার সাথে সবাই এই গানটি মুখে মুখে গাইতে শুনি। আর ফিল্ম হিট হলে ফিল্মের গান অটোমেটিক্যালি হিট হয়ে যায়। সেখানে প্রচারণা বেশী থাকে আর নায়ক-নায়িকাদেরও ভূমিকা থাকে। কিন্তু অডিও গানের ক্ষেত্রে পুরোটাই আমার উপর। আমার শ্রোতাদর্শকরা আমাকে ভিডিওতে দেখতে ভালোবাসে।

বিডি২৪ লাইভ: দীর্ঘ দশ বছর পাড়ি দিয়ে আজকের এই অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজের এই অবস্হান নিয়ে আপনি কতটুকু তৃপ্ত? আর স্টারডমটা কিভাবে উপভোগ করেন?
ইমরান: এ পথ চলাটা আমার জন্য সহজ ছিলো না। ২০০৮-থেকে ২০১৮ আজ এ পর্যন্ত আমি যা হয়েছি তা আমার কষ্টের অর্জন, আমার বাবা-মায়ের দোয়া আর শ্রোতাদর্শকদের ভালোবাসা। এই দশটা বছর অনেক স্ট্রাগল করেছি। অনেক ভালো মন্দ মানুষের সাথে মিশেছি, অনেক কিছু শিখেছি। যার কারণে আমি অনেক কিছু পেয়েছি আবার হারিয়েছিও। তবে আমি বলবো এখনও অনেক শিখার বাকি, দেখার বাকি। এখনও শিখে যাচ্ছি, শিখে যাবো। আর স্টারডম উপভোগ করার কিছুই নেই। যত্ন করে নিজের জায়গাটা ধরে রাখার চেষ্টা করি।

বিডি২৪লাইভ/আইএন/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: