‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না’

প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০১:৪৩ পিএম

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনী অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রায় ২১-২২ দিন পেরিয়ে গেলেও খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার নিকটাত্মীয়দের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। বন্দিদের যে আইনসম্মত অধিকার তা থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

আজ সোমবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

এসময় রিজভী বলেন, বন্দীদের যে আইনসম্মত অধিকার তা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বেগম জিয়াকে। এই নিষ্ঠুর আচরণ কিসের ইঙ্গিতবাহী? বিশাল লাল দেয়ালের মধ্যে রুদ্ধকপাট মুক্তিহীন বেগম জিয়াকে অন্তরীণ রেখে বাইরের দুনিয়া থেকেও সম্পূর্ণরুপে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে দেওয়ার যে কারাবিধান সেটিকে গায়ের জোরে লঙ্ঘন করাটা বেগম জিয়াকে নিয়ে সরকারের আরেকটি নতুন কোনো খারাপ পরিকল্পনা কিনা, তা নিয়ে প্রশ্নবোধক চিহ্নটা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে।

&dquote;&dquote;তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর কোনো নিষ্ঠুর স্বৈরতান্ত্রিক দেশেও বন্দীদের সাথে এরুপ দুর্ব্যবহার করা হয় না, যা করা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম জিয়ার ওপর। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আত্মীয়স্বজন ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাক্ষাতের জন্য বারবার আবেদন করার পরেও কারা কর্তৃপক্ষ তাতে কোনো কর্ণপাতই করেনি।

রুহুল কবির বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী ৭ দিন পরপর বন্দীদের সাথে সাক্ষাতের নিয়ম। অথচ বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে এই বিধান করা হলো ১৫ দিন পরপর। এখন সেই ১৫ দিনের বিধানকেও সরকারের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ অগ্রাহ্য করছে। বেগম জিয়ার ওপর এই মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নানাভাবে পর্যুদস্ত করার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনারই অংশ। বেগম জিয়ার সাথে তার নিকটাত্মীয়দের দেখা করতে না দেওয়াটা রীতিমতো কঠিন মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে শুধু তার আত্মীয়স্বজনরাই নয়, দেশবাসী উদ্বেগাকুল ও উৎকণ্ঠিত। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার আত্মীয়স্বজনদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, নির্বাচন পূর্বাপর ব্যাপক সহিংসতা, রক্তপাত, ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা, ধানের শীষের নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করাসহ ধানের শীষের প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদেরকে পাইকারি-হারে গ্রেফতার, আদালতকে ব্যবহার করে প্রার্থিতা বাতিলসহ ভোটের নামে নিষ্ঠুর তামাশায় শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ক্ষুদ্ধ ও প্রতিবাদে সোচ্চার। মানুষের ভোটাধিকার হরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যাক্কারজনক ভূমিকায় দেশবাসী হতবাক ও ক্ষুদ্ধ।

তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন জনগণের ললাটে এক বিষাক্ত কাঁটা। অথচ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘‘এবারের নির্বাচনের শৃঙ্খলা আগামীবারেও থাকবে।’’ সাবাশ এইচ টি ইমাম সাহেব, আপনি আত্মমর্যাদাহীন, অনুশোচনাহীন, আজ্ঞাবাহী একজন মানুষ যার পক্ষে আগামী নির্বাচন নিয়ে এ ধরনেরই অঙ্গীকার করা ছাড়া আর কিইবা বলার থাকতে পারে। বিবেক বিক্রি করা এইচ টি ইমাম সাহেবরা মানুষের ভোট কেড়ে নিতে কত দ্বিধাহীন, কত নির্লজ্জ! ভোগ-লালসায় অস্থির থাকায় এদের কাছে মানবিক বিবেচনাগুলো হারিয়ে গেছে। এরা ক্ষমতা ধরে রাখতে পুলিশের বুটের তলায় মানুষের ভোটাধিকার চেপে দেওয়ার যে কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেটিরই পুনরাবৃত্তি করার অঙ্গীরকার করলেন আগামী নির্বাচনের জন্য। যারা ভোট ও বিবেক বিসর্জন দিয়ে ন্যায়-অন্যায়ের এথিক্সের ধার ধারেন না কেবল তাদের দ্বারাই পূর্বে সংঘটিত যেকোনো ঘৃন্য কাজের পূণরাবৃত্তিই হওয়াই সম্ভব।

রিজভী আরও বলেন, আমি সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই, জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণ থামবে না। জনগণের ওপর জবরদস্তি করে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবেই। এ দেশের ইতিহাস বিদেশি প্রভু ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রক্তঝরা সংগ্রামের ইতিহাস। সুতরাং বর্তমান মহাজালিয়াতি, মহাচালিয়াতি, বিরামহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচনে তৈরি নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসন, গণতন্ত্র হরণ, বিরোধী দল ও মত নিধনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রবল আন্দোলনের খরস্রোত ধেয়ে আসছে।

রিজভী অভিযোগ করেন, সংবিধান মেনে শপথ নেননি নতুন সংসদ সদস্যরা। নতুন মন্ত্রিসভাকে মহাজালিয়াতির নির্বাচনের মন্ত্রিসভা উল্লেখ করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: