গণধর্ষণের বিচার না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:৫৭ পিএম

রাতভর গণধর্ষণ, এ ঘটনায় অভিযোগ করার পরেও বিচার না পেয়ে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় এক নারী পোশাক শ্রমিক আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। মাহফুজা নামে (১৬) এই কিশোরী যে গার্মেন্টে কাজ করতেন সেই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজারসহ কয়েকজন মিলে রাতের আঁধারে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে।

সোমবার (৭ জানুয়ারি) সকালে জামগড়া রূপায়ণ গেট এলাকায় রবিউলের ভাড়া বাড়ি থেকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। 

নিহত কিশোরী পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কালাইপাড়া গ্রামের আবু হানিফের মেয়ে। আবু হানিফ জামগড়া এলাকায় মুদি দোকান করতেন। মাহফুজা বাসা থেকেই গার্মেন্টে আসা যাওয়া করতেন।

এদিকে নিহতের বোন আফরুজা জানান, তার বোন জামগড়া এলাকার ইয়াগী পোশাক কারখানায় চাকরি করত। রহিম নামের একজন সুপারভাইজার তাকে বেশ কিছু দিন ধরে বিরক্ত করছিল।

শনিবার (৫ জানুয়ারি) রাতে বাসায় ফেরার সময় ওই কারখানার সুপারভাইজার রহিম, লাইন চিপ রিপন, স্বপন ও হৃদয় তার বোনকে জোড় করে তুলে নিয়ে রূপায়ণ মাঠে রাতভর নির্যাতন করে ভোররাতে ছেড়ে দেয়। ঘটনার পর তার বোন আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনার সত্যতাও খুঁজে পায়।

ধর্ষণের ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে এলাকার নাজমুল নামের এক লম্পটের নেতৃত্বে ঘটনার বিচার করে ধর্ষকদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু জরিমানার টাকা ধর্ষিতার পরিবারকে না দিয়ে নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুরো টাকা আত্মসাৎ করতে সালিশকারীরা উল্টো ধর্ষিতার বোন, বাবা ও ধর্ষিতাকে হুমকি ধমকি দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করতে শাসিয়ে দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিহতের বোন আফরুজা বলেন, সালিশের নামে ওরা রহিমদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমাদের এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। সব মিলিয়ে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। এসব নিয়ে আমার বোন মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম আজাদ মাহফুজার বাসায়ও যান রোববার। থানা থেকে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন মাহফুজা। জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন ছিল।

ধর্ষিতার বাবা জানান, সোমবার ( ৭ জানুয়ারি) সকালে প্রতিদিনের মতো সবাই বাসা থেকে কাজের জন্য বের হয়ে যায়। এ সময় মাহফুজা ও আমার বড় মেয়ে বাসায় ছিল। একপর্যায়ে বড় মেয়ে বাসার বাইরে গেলে মাহফুজা আত্মহত্যা করে। পুলিশ ধর্ষক রহিমকে আটক করেছে।

মোহনা বাসের ভেতর নারীর লাশ : অপর দিকে সোমবার সকালে আশুলিয়া ডিইপিজেডের সামনের মহাসড়কে রাখা মোহনা বাসের মধ্য থেকে ২৮ বছর বয়সী এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের বাড়ি শেরপুর জেলায়। মহিলার নাম দুখিনী বেগম। পুলিশ জানান, এ নারী মোহনা পরিবহনের যাত্রী ছিল। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা যানা যায়নি। বাসের চালক ও হেলপার পলাতক।

বিডি২৪লাইভ/এসএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: