চমক থাকছে সংসদ পরিচালনায়ও

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:১৭ এএম

কাজী সোহাগ: মন্ত্রিসভার চমকের পর এবার সংসদ পরিচালনাতেও থাকছে চমক। স্পিকার পদ ছাড়া অন্য পদগুলোতে দেখা যেতে পারে নতুন মুখ। এখানেও প্রাধান্য দেয়া হবে অপেক্ষাকৃত তরুণদের। আওয়ামী লীগ ও সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় রংপুরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকার হিসেবে আবারও ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে বেছে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কারণে ওই পদে আর কারও নাম শোনা যাচ্ছে না।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, সংসদ পরিচালনায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী যথেষ্ট যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সব দলের এমপিরাও তাকে পছন্দ করেন।

তার এ ধরনের গ্রহণযোগ্যতার কারণে স্পিকার হিসেবে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবছে না আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে শিরীন শারমিন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপাতত কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ভবিষ্যতে কি হবে তা এখন আমি জানি না।

অন্যদিকে গুঞ্জন রয়েছে ডেপুটি স্পিকারের পদ নিয়ে। এ নিয়ে দুই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। প্রথমত দশম জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। স্পিকারের অনুপস্থিতিতে তিনি বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন সংসদ অধিবেশনের কার্যক্রম। উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন সাবলীলভাবে। এ হিসেবে আবারও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে তাকে দেখা যেতে পারে। আবার গত সরকারের অংশীদারিত্বে থাকা প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবার মন্ত্রিসভায় থাকছে না। তাই তাদের পক্ষের কাউকে ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচিত করা হতে পারে। এক্ষেত্রে নাম শোনা যাচ্ছে ফখরুল ইমামের।

বিরোধীদলীয় সদস্য হিসেবে গত সংসদে তিনি ব্যাপক তৎপরতা দেখিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ডেপুটি স্পিকার মানবজমিনকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদে এমপি ছাড়া আমি আর কি হিসেবে থাকবো তা জানা নেই। আমার কাছে কোনো খবরও নেই।

এদিকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছেন স্পিকার। দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের পর তিনি গতকাল ওই স্বীকৃতি দেন। তবে সরকারদলীয় উপনেতা নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। দশম জাতীয় সংসদে এ পদে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। বয়সজনিত কারণে এবার তাকে বাদ দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তার পরিবর্তে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে এ আসনে বসানো হতে পারে।

সংসদ পরিচালনায় এর পরেই গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে সরকার দলীয় চিফ হুইপ। দশম জাতীয় সংসদে ওই পদে ছিলেন আ স ম ফিরোজ। এবার তার পদে অন্য কাউকে নির্বাচনের কথা বিবেচনা করছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে সাবেক হুইপ নূরে আলম চৌধুরী ও ইকবালুর রহিমের নাম শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে অন্য কোনো তরুণ এমপিকেও দেখা যেতে পারে। তবে হুইপ পদে সিনিয়রদের প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানা গেছে। দশম সংসদের ৬ হুইপের মধ্যে সাহাবউদ্দিনকে এবার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। সংসদ পরিচালনায় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদটি অনেকের কাছেই কাঙ্ক্ষিত। কারণ মন্ত্রণালয়গুলোকে এসব কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হয়। আর স্থায়ী কমিটির সভাপতিদের বলা হয় ‘ছায়ামন্ত্রী’। নবম ও দশম দুই সংসদে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তৎপরতা ছিলো লক্ষণীয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত এসেছে কমিটির বৈঠকগুলো থেকে।

আগের মতো এবারও কমিটিগুলোকে অধিকতর শক্তিশালী করা হবে। দশম সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এবারের মন্ত্রিসভায় এসেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. আবদুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি ছিলেন দীপু মনি, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি ছিলেন হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি ছিলেন টিপু মুনশি, ডাক টেলিযোগাযোগের সভাপতি ছিলেন ইমরান আহমেদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন তাজুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন জাহিদ আহসান রাসেল। এবারের মন্ত্রিসভায় তারা সবাই স্থান পেয়েছেন। এবার স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ পদে সিনিয়রদের নির্বাচিত করা হবে। আর বেশ কিছু স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ দেয়া হবে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও শরিক দলগুলোর এমপিদের। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: