উপজেলা নির্বাচনেও থাকছে ইভিএম

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৪০ পিএম

সিটি কর্পোরেশন এবং সংসদ নির্বাচনের পর এবার প্রথমবারের মত উপজেলা নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করবে নির্বাচন কমিশন। সে লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ বিধিমালায় পরিবর্তন আনছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি ইসির একটি সভা হবে। বৈঠকে জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হবে। বিধিমালায় ইভিএম ছাড়াও নতুন করে আরো কিছু বিষয় যুক্ত করা হতে পারে। বিধিমালা পরিবর্তনের জন্য ইসির আইন শাখা একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে।

বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে সংসদ নির্বাচনে ৬ আসনে ব্যবহৃত ইভিএমের বিষয়ে পর্যালোচনা; অনলাইন মনোনয়নপত্র জমা; কেন্দ্রভক্তিক ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশ; আসন্ন উপজেলা নির্বাচন; ভোটার তালিকা হালনাগাদে ট্যাব এবং জিআইএস ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা হবে।

নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। আগামীতে উপজেলাসহ অন্যান্য নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। আমরা চাইব সব ভোটে বেশি বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, ফেব্রুয়ারিতে তফসিল দিয়ে মার্চে কয়েক ধাপে ভোট করবে ইসি। এ নির্বাচনেও লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষসহ অন্যান্য দলীয় প্রতীকের। দেশে ৪৯২টি উপজেলা রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটিতে সম্প্রতি নির্বাচন হয়েছে। তবে মার্চের মধ্যে যেগুলো নির্বাচন উপযোগী হবে সেগুলোতে প্রথম ধাপে ভোট হবে । প্রর্যায় ক্রমে ধাপে ধাপে সব উপজেলাতে ভোট হবে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন তো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই করতে হবে। যেহেতু ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা আর এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা। তাই আমরা মার্চ মাস ধার্য করেছি উপজেলা নির্বাচন করার জন্য। কমিশন যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেভাবে এগিয়ে যাব। আইন অনুযায়ী, কোনো উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তির আগের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সচিব বলেন, নির্বাচন সামগ্রী আগেই কেনা রয়েছে। নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ইভিএম মেশিনও যথেষ্ঠ পরিমাণে প্রস্তুত রয়েছে। তাই নির্বাচনের সিংহভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন বলা যায়। এখন শুধু ভোটের জন্য স্থানীয় সরকারের সম্মতি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সব দলকে এখানে অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা সময় মত নির্বাচন করব। এক কথায় যদি বলি, এখানে কোন দল অংশ নিল, কে নিল না তার জন্য ইসির কোনো অপেক্ষা থাকবে না।

ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ হোসেন জানান, এবার  প্রথম বারের মত দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদ ভোট হবে। ভোটের তফসিল হওয়ার পর ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় রাখা হতে পারে ভোটের জন্য।ধাপে ধাপে ভোট হলে প্রতিটি ধাপের জন্য আলাদা আলাদা তফসিল হবে। অন্যান্য স্থানীয় সরকারের  নির্বাচনের মত এ নির্বাচন গুলোতে সকাল ৯ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।

গতবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়ায় সব দল অংশ নিতে পেরেছে। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় ৩৯ রাজনৈতিক দলের বাহিরে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে আসতে হবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছর ৪৬০টি উপজেলায় এই নির্বাচন হয়। দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছরও ৪৬০টি উপজেলায় এই নির্বাচন হয়। তৃতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছর ৪৭৫টি উপজেলায় এই নির্বাচন হয়। চতুর্থবারের মতো ২০১৪ সালে  উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ছয় ধাপে ৪৮৭টিতে নির্বাচন হয়।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: