নালিতাবাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে অথিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৩০ পিএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মানুপাড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ইততোমধ্যেই প্রায় পৌণে দুই লাখ টাকা আদায় করেছেন।

উপজেলার মানুপাড়া গ্রামের পূর্বপাড়া ছায়েদুলের বাড়ি থেকে আড়াখালী পর্যন্ত ৬০ জন গ্রাহককে পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দিতে কাজ চলছে। কাজের শুরুতেই তাদের কাছ থেকে ফিরোজ, শফিকুল, রফিক ও সালাম মাস্টার নামে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি মিলে বিদ্যুতের সংযোগ পেতে টাকা দাবী করে। গ্রাহকপ্রতি প্রথমে ৭ হাজার টাকা দাবী করলেও পরবর্তীতে ৬ হাজার এবং শেষ পর্যন্ত ৪ হাজার ৫শ করে টাকা দাবী করা হয়। দাবীর প্রেক্ষিতে স্থানীয় ৬০ জন গ্রাহকের মধ্যে অনেকেই ৩ থেকে ৪ হাজার করে টাকা ইতিমধ্যেই এ চক্রটির হাতে তোলে দিয়েছেন। অনেকের কাছ থেকে আবার ১০-১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। এমনকি খুঁটির জন্যও ৪-৬ হাজার করে টাকা দাবী করেছে চক্রটি।

সূত্রমতে, গ্রাহক হওয়ার জন্য আবেদন ফি ১শ টাকা, ভ্যাট ১৫ টাকা ও মিটারের নিরাপত্তা বাবদ ৪শ টাকা মিলে সংযোগ ফি সর্বমোট ৫১৫ টাকা। বিদ্যুত সংযোগের পাশাপাশি এক পয়েন্টের ওয়্যারিং করে দেওয়া হয়। যার সর্বোচ্চ ব্যয় দাড়ায় মজুরিসহ ১২শ টাকা।

ওই গ্রামের গ্রাহক রুবেল মিয়া মিয়া (২২) জানান, স্থানীয় ফিরোজ মিয়া খুঁটি বাবদ ৪ হাজার ও ১টি মিটার ওয়্যারিংসহ ১০ হাজার টাকা মিলে মোট ১৪ হাজার টাকা তার কাছ থেকে নিয়েছে।

একই গ্রামের গ্রাহক জামাল উদ্দিন (৫০) জানান, স্থানীয় ফিরোজ মিয়া তার কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে, আরও ৫ হাজার টাকা দাবী করেছে।

অপর গ্রাহক আনোয়ার হোসেন (২৬) জানান, আমার কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা দাবী করে বলা হয় ‘সকালে টাকা দিলে বিকেলে খুঁটি দেওয়া হবে।’ আমি টাকা না দেওয়ায় আমাকে খুঁটি দেওয়া হয়নি। আর যারা টাকা দিয়েছে তাদের খুঁটি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জাহাঙ্গীর নামে স্থানীয় এক যুবক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে উল্লেখিত টাকা আদায়কারীরা পুলিশ দিয়ে বিদ্যুত সংযোগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে উল্টো তাকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। 

টাকা আদায়কারী ফিরোজ মিয়ার (৩৫) ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে নিজেকে ফিরোজ বলে স্বীকার করলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নিজেকে নোয়াখালীর মোঃ আশিকুর রহমান খোকন বলে পরিচয় দেন।

টাকা আদায়কারী রফিক মিয়ার (৩৬) ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এলাকায় অনেকেই চেষ্টা করেছে কিন্তু বিদ্যুত আনতে পারে নাই। তাই আমি একটু এলাকার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। এসময় তিনি প্রথমদিকে তার জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও নিজ হাতে কোন টাকা আদায় করেননি বলে দাবী করেন।

অপর অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, সরকারী নিয়মে টাকা আদায় করছি।

এ ব্যাপারে শেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মাসরুর হক খান জানান, বিদ্যুতের সংযোগ পেতে বর্তমানে ৫১৫ টাকা খরচ হয়। আর ওয়্যারিং এর বিষয়টি গ্রাহকদের নিজস্ব ব্যাপার। এসময় তিনি কেউ অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকলে থানা পুলিশে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: