স্ত্রীর সঙ্গে দুই যুবকের পরকীয়া, ধান ক্ষেতে নিয়ে স্বামীর কাণ্ড!

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:৩৬ এএম

নোয়খালীর সদর উপজেলায় মুঠোফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পারভীন আক্তারকে (১৮) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় শেখ সেলিম নামের তার স্বামীকে চট্টগ্রাম থেকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ের পরিদর্শক তৌহিদুল আনোয়ারের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আটক শেখ সেলিম (২৯) চট্টগ্রামের চাটগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তার বাড়ি নড়াইলের লোহাগাড়া উপজেলার ডিগ্রি গ্রামে।

শনিবার দুপুরে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাসু দত্ত চাকমা। এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম জানায়, পরকীয়ার কারণে সে স্ত্রীকে হত্যা করেছে।

জানা যায়, নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব শুল্লকিয়া গ্রামের মো. জহিরুল হকের মেয়ে পারভীন আক্তার তিন বছর আগে চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। সেখানে নড়াইল জেলার ইটনা ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর গ্রামের মো. শেখ সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেলিমও একই কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।

সেলিম জানায়, পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ঈদুল ফিতরের তিন দিন আগে সেলিম তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রেখে পারভীন আক্তারকে বিয়ে করে ঢাকায় চলে যায়। এ ঘটনার পর সেলিমের প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম সেলিমকে খোঁজাখুঁজি করে ঢাকায় গিয়ে তার দেখা পান। এর পর সেলিমের দ্বিতীয় বিয়ের কথা ফাতেমা জানতে পারেন। তিনি এ বিয়ে মেনে নিলেও ফাতেমার পরিবার তা মানতে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়।

&dquote;&dquote;এ ঘটনার পর পারভীনও সেলিমের সঙ্গে থাকতে রাজি হয়নি। তিন মাস আগে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে পারভীন চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর গ্রামের বাড়ি চলে আসে। কিন্তু পারভীন বিয়ের কথা পরিবারের কাছে গোপন রাখে।

সেলিম জানতে পারে, তার স্ত্রী পারভীনের সঙ্গে স্থানীয় সাদ্দাম ও শাহেদ নামে দুই যুবকের প্রণয়ের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে পারভীন ও সেলিমের মধ্যে মুঠোফোনে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতো।

সেলিম জানায়, পারভীন তাকে তার মা-বোনকে জড়িয়ে অশালীন কথা বলত। এর পর সেলিম পারভীনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৯ জানুয়ারি সেলিম সোনাপুর জিরো পয়েন্টে এসে হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে একটি ধারালো বড় ছুরি কিনে সন্ধ্যায় পারভীনের বাড়ির পাশে গিয়ে মুঠোফোনে কল দিয়ে ডেকে নেয়। পারভীন বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়ে সেলিমের কাছে যায়। বাড়ি থেকে ১০০ গজ দূরে একটি ধান ক্ষেতের পাশে নিয়ে সেলিম পারভীনকে তার সঙ্গে চট্টগ্রাম যেতে বলে।

এতে পারভীন রাজি না হয়ে সেলিমের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্বমুহূর্তে তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সেলিম লাশ ধান ক্ষেতের পাশে ফেলে রাখে।

ঘটনার পর মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সেলিমের অবস্থান নিশ্চিত করা হয় জানিয়ে পরিদর্শক তৌহিদুল বলেন, চট্টগ্রামের চাটগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকায় একটি টিনশেড ঘর থেকে সেলিমকে আটক করে পুলিশ।

পারভীন আক্তার ফাহিমা হত্যার ঘটনায় তার বাবা জহিরুল ইসলাম মামলা করেছেন। ওই মামলায় সেলিমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানান পিবিআইয়ের চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: