জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করছি না, করবো না

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:২০ এএম

জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করছেন না, ভবিষ্যতেও করবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। গতকাল গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষে বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। ড. কামাল বলেন, জামায়াত নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত একদম পরিষ্কার। তাদের নিয়ে আমরা রাজনীতি করার কথা কোনদিন চিন্তাও করিনি। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে আমরা তাদের সঙ্গে ঐক্য করেছি। কিন্তু আমি সঙ্গে সঙ্গে বলেছি- ঐক্য করার সময় আমাকে বলা হয়নি যে তারা এর মধ্যে থাকবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে একদম পরিষ্কার।

জামায়াতকে নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো না। এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন,  তাড়াতাড়ি ঐক্য করতে গিয়ে যে ভুলগুলো হয়েছে তার মধ্যে জামায়াত ইস্যুটাও একটা ভালো উদাহরণ।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বলেছি, আমি যখন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছি তখন আমাকে জানানো হয়নি যে জামায়াতকেও ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হবে। আমার মতে এটাও একটা ভুল। এ সময় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা ঐক্য করেছি বিএনপির সঙ্গে। জামায়াত বা ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে ঐক্য করিনি। তারপরও যেহেতু জামায়াতের ২২ জনের কথা চলে এসেছে।

সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিএনপিকে জানিয়েছি। তারা তাদের মিটিংয়ে উত্থাপন করেছে। সেখানে তারা এটার প্রতিবাদ দিয়েছে। বিএনপি বলেছে, জামায়াত হিসেবে কাউকে প্রতীক দেয়নি। তারা বিএনপি হিসেবেই প্রতীক দিয়েছে। তার পর আমরা জানিয়েছি অবিলম্বে জামায়াতের ব্যাপারটা সুরাহা করা হোক। অবশ্যই আমরা জামায়াতের ব্যাপারটা সুরাহা চাই। আমরা পরিষ্কার বলেই দিয়েছি জামায়াতকে নিয়ে আমাদের রাজনীতি করার ইচ্ছা নেই। আগেও করিনি। এখনো করি না। ভবিষ্যতেও করবো না। বিএনপি যদি জামায়াতকে ছেড়ে না দেয় তাহলে কি আপনারা ঐক্যফ্রন্টে থাকবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, যদি বলে কোনো উত্তর হয় না। যখন হবে তখন আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো। গণফোরামের দুই বিজয়ী এমপির শপথ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের ব্যাপারে আরো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা ইতিবাচকভাবে সিদ্ধান্ত নেব এটা বলেছি। তার মানে এই নয় যে, তারা শপথ গ্রহণ করবেন।

ট্রাইব্যুনালে মামলা করার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তবে মামলা করবে প্রত্যেক প্রার্থী। তিনি যদি মনে করেন এটা কোনো নির্বাচন হয়নি তাহলে তিনি মামলা করতে পারেন। ৩০ দিনের মধ্যে মামলা করার নিয়ম রয়েছে। এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ সময় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র ভিত্তিক ফলাফল চেয়েছি। কিন্তু এখনো পাইনি। তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও বিভিন্ন রিপোর্ট  সংগ্রহ করেছি। আমি নিজে ঢাকা-৭ আসনের কোথায় কি অনিয়ম হয়েছে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট দিয়েছি।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের মত প্রকাশের অধিকার ও ভোটাধিকারকে খর্ব করেছে। প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ফলে জনগণ এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নেতৃবৃন্দ দৃঢ়ভাবে মত প্রকাশ করেছেন- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

তবে তাড়াতাড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল-ত্রুটি সংঘটিত হয়েছে, তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, গণফোরামের সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গণফোরামের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ২৩ ও ২৪শে মার্চ ঢাকায় গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা ড. রেজা কিবরিয়া, মুকাব্বির হোসেন, আ ও ম শফিক উল্লাহ প্রমুখ। সূত্র: মানবজমিন। 

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: