ফেসবুকে ভাইরাল উদ্ধৃতি: ‘খুশির ঠ্যালায়, ঘোরতে’

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০৩:১৯ পিএম

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলোতে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে ভালো লাগা, ভালো না লাগা আর খুশির জোয়ার দেখা মিলছে প্রতিনিয়তই। আর সেই আনন্দ তারা প্রকাশ করছেন একটি ভাষায়, আর সেটা হল, ‘এই মনে করেন ভাললাগে, খুশির ঠ্যালায়, ঘোরতে।’

সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- হঠাৎ এই সংলাপটি নিয়ে ইউজারদের মধ্যে কেন এতো মাতামাতি? এই লাইনটি এলো কোথা থেকে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। 

মূলত বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাই টিভির একটি সরাসরি সম্প্রচারিত প্রতিবেদন থেকেই এই লাইনটির সূত্রপাত। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় ঢাকার-৫ আসনের দনিয়া একে হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ভোটের চিত্র নিয়ে খবর সংগ্রহ করছিলেন মাই টিভির সাংবাদিক মাহবুব সৈকত।

&dquote;&dquote;
মাই টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদন মাহবুব সৈকত

লাইভ সম্প্রচারের এক পর্যায়ে তিনি ভোটকেন্দ্রের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন নারীর কাছে জানতে চান যে তাদের হাতে ভোট দেয়ার অমোচনীয় কালি দেয়া আছে, অর্থাৎ তাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও তারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?

সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে এক নারী তখন বলেছিলেন যে, ‘এই থাকতে মনে করেন। খুশিতে ঠ্যালায়, ঘোরতে।’

সে সময় এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে কম-বেশি শেয়ার হয়েছে ঠিকই।

তবে এবার এই ভিডিওর চাইতে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, সেই নারী ভোটারের উদ্ধৃতিটি।

&dquote;&dquote;
মিউজিক্যাল ডাবিং অ্যাপ এই লাইনটিকে আরও নজরে আনে

এ বিষয়ে সাংবাদিক মাহবুব সৈকত বিবিসি বাংলাকে জানান, তিনি যখন খবর সংগ্রহের কাজটি করছিলেন তখন তিনি ভাবতেও পারেননি তার এই প্রতিবেদনটির একটি অংশ নিয়ে এতোটা আলোচনা হবে। তা-ও আবার প্রতিবেদন প্রকাশের পাঁচ বছর পর।

ওই প্রতিবেদনে মিস্টার সৈকত বলেন, ‘আসলে যখন আমরা সংবাদ সংগ্রহে যাই তখন আমরা বস্তুনিষ্ঠ-ভাবে খবর সংগ্রহের কাজেই থাকি। এখন পরবর্তীতে এটা নিয়ে আলোচনা হবে কি হবে না সেটা মাথায় থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘তবে রিপোর্টটি নিয়ে এতো বছর পর এইরকম আলোচনা হবে ভাবিনি।’

তবে মিস্টার সৈকতের প্রত্যাশা কেউ যেন তার খবরটিকে পক্ষপাতদুষ্ট বা নেতিবাচক না ভাবেন। 
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘একজন রিপোর্টারের কাজ সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের কথাগুলোকে সামনে আনা। আমি সেটাই করেছি। এর পেছনে আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না।’

‘এখন একেকজন মানুষ বিষয়টিকে একেকভাবে নেবে। তবে আমি আশা করবো আমার রিপোর্টের একটা উদ্ধৃতি নিয়ে হাসি ঠাট্টা যাই হোক, সেটা নিয়ে যেন কোন পক্ষপাতমূলক বা নেতিবাচক আলোচনা না হয়।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে বিষয়টিকে নিয়ে নানা আঙ্গিকে ট্রল করছেন ইউজাররা। কেউ এ সংক্রান্ত মিম শেয়ার করছেন। কেউবা নিজের ব্যক্তিগত ছবি বা ইভেন্টের বিবরণীতেও এই লাইনটি দিয়ে প্রকাশ করছেন তাদের আনন্দের ভাষা।

অনেকে এই লাইনটিকে ঘিরে ব্যাঙ্গ করতেও ছাড়ছেন না। ফেসবুকে বেশ কয়েকজনকে দেখা যায়, সমাজে প্রচলিত বা অযাচিত কিছু প্রশ্ন লিখে, উত্তর হিসেবে তুলে ধরছেন এই লাইনটি। ঠিক যেমনটা জাফরিন হক করেছেন, ‘মার্কেটিং জবে তো প্রচুর ট্রাভেল করতে হয়, তুমি মেয়ে হয়ে মার্কেটিংয়ে জব করো কেন? এ.এ এ.. মনে করেন, খুশিতে, ঠ্যালায়, ঘোরতে ।’

&dquote;&dquote;
অনেকে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রশ্নের উত্তরে ব্যবহার করছেন এই লাইনটি

এই পোস্টের ব্যাপারে জাফরিন হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকেই মানতে পারে না যে, মেয়েরা ডেস্কজবের বাইরে কোন চাকরি করবে। তখন তারা এই ধরণের প্রশ্ন করে বসে। সেইসব প্রশ্নদাতার উদ্দেশ্যে ব্যাঙ্গ করেই পোস্টটা দিয়েছি।’

ওই প্রতিবেদনে অরুপ রতন চৌধুরীর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ছিল এমনই আরেক ধরণের প্রশ্নকে ঘিরে, ‘তুমি তো বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিও করতে পারতা; সিনেমাতে কাজ কর কেন?

আমি- এই মনে করেন ভাল্লাগে। খুশির, ঠ্যালায়, ঘোরতে!’

&dquote;&dquote;
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে এই উদ্ধৃতি

‘When someone asks me:

অন্যদিকে জি সন বিশ্বাস নামে আরেক ইউজার লিখেছেন, ‘ঢাকায় এতো জায়গা থাকতে মিরপুরে থাকেন কেন?’ 

‘এই মিরপুরে থাকতে মনে করেন ভাল্লাগে। খুশিতে, ঠেলায়, ঘোরতে’।

এমনই আরও নানা আঙ্গিকের প্রশ্ন-উত্তর, বা পোস্টে এই একটি উদ্ধৃতিকে ঘিরে চলছে ঠাট্টা ও আলোচনা।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: