নতুন স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িছাড়া কনস্টেবল, বিয়ের দাবিতে অনশনে কলেজছাত্রী

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:০৩ পিএম

পেশায় পুলিশ কনস্টেবল তিনি। দীর্ঘ তিন বছর প্রেম করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রী প্রেমিকাকে বাড়ি নিয়ে এসে তাকে বিয়ে না করে বিয়ে করেছেন এক নাবালিকাকে। আর এতেই ক্ষেপেছেন প্রেমিকা। পাঁচ দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকের বাড়ির সামনে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় ঘটেছে এমন ঘটনা। প্রেমিক সোলেমান মিয়া (২০) গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের নয়া গাঙেরপাড় গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র। পেশায় তিনি একজন পুলিশ কনস্টেবল। তিনি হবিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে। প্রেমিকা একই গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে সাবিনা বেগম (১৮)। তিনি জৈন্তাপুরের ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের ছাত্রী।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাফলংয়ের নয়াগাঙেরপাড় গ্রামের আবু তাহের মিয়ার মেয়ে ও জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাবিনার সঙ্গে একই গ্রামের পুলিশ সদস্য সোলেমানের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু তাদের দুজনের এ সম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে পাশের গ্রামের অন্য আরেক মেয়ের সঙ্গে সোলেমানের বিয়ে দেন তার বাবা-মা। গত ১০ জানুয়ারি সাবিনাকে বিয়ে না করে জাফলং ইউনিয়নের আসামপাড়া গ্রামের মখলিছুর রহমানের মেয়ে ফাতেমা (১৬) নামের এক নাবালিকাকে বিয়ে করেন তিনি। ফাতেমা হাজী সোহরাব আলী স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। 

গত ৯ জানুয়ারি সোলেমানের গায়ে হলুদ হয়। ওই রাতেই তার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে সাবিনা। সোলেমানের বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পরই তার বাবা-মা সাবিনাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে বিয়ের দাবিতে তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পরে ওই রাতেই সোলেমানের বাবা-মা ও তার আত্মীয়-স্বজন তাদের পছন্দের পাত্রীকে নিয়ে সোলেমানকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।

বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে সোলেমান তার বাবা-মায়ের চাপের মুখে তাদের পছন্দের পাত্রীকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। তবে এখনো প্রেমিকের প্রতারণার বিচার চেয়ে এবং বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অনশনে রয়েছে সাবিনা।

বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকা সাবিনা জানায়, প্রায় দুই বছর ধরে সোলেমানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। সেই সুবাদে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সোলেমান তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করেছেন।

সাবিনার ভাষ্যমতে, এখন সে আমাকে তার বাড়িতে আসতে বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সোলেমান বাড়িতে ফিরে এসে আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দেবে ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এই বাড়িতে অবস্থান করব। এর ব্যতিক্রম কোনো কিছু ঘটলে আমি এই বাড়িতেই আত্মহত্যা করব।

তিনি ও তার স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন সোলেমান পুলিশ সদস্য হওয়ায় প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন তাদের।

এ ব্যাপারে পুলিশ কনস্টেবল সোলেমানের সাথে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সোলেমানের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহালম মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর ওই বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনরত মেয়েটির সাথে কথা বলেছি। মেয়েটিকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: