হাসপাতাল ছাড়লেন অহনা

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:২০ পিএম

কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত অভিনেত্রী অহনা হাসপাতাল ছেড়েছেন।

গতকাল বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর তিনি অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন। হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার চিন্ময় সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে অহনা জানান, তিনি ভালো নেই। রক্তে জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। নড়তে কষ্ট হচ্ছে। সেরে উঠতে বহু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অন্তত দেড় মাস বিছানায় বিশ্রামে থাকতে হবে। তিন মাসের মধ্যে কোমরের টিস্যুর ক্ষত সেরে না উঠলে তাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন অভিনেত্রী অহনা। এতদিন পার হয়ে গেলেও এখনও শারীরিক কোন উন্নতি নেই বরং অবস্থা আরও খারাপের দিকে। ট্রাকচালকের নির্মমতায় গুরুতর আহত হওয়ার পর অহনাকে ভর্তি করা হয়েছিল রাজধানীর উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (১৪ জানুয়ারি) চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘ট্রাকচালক ছিল মাদকাসক্ত। অথচ অনেকে মন্তব্য করেছেন আমি নাকি মদ খেয়েছিলাম! আসল সত্যিটা হচ্ছে, মদ আমি খাইনি। মদ খেয়েছিল ট্রাক চালক।’

উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি রাতে শুটিং শেষ করে অহনা তার খালাতো বোন মিতুকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় ফেরার পথে উত্তরার কাবাব ফ্যাক্টরি থেকে কিছুটা সামনে সাত নম্বর সেক্টরের পূর্ব মাথায় একটি বেপরোয়া গতির পাথর বোঝাই ট্রাক সজোরে ধাক্কা দিয়ে অহনার ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষতি করে। অহনা গাড়ি থেকে নেমে ট্রাকচালককে নামতে বলেন। এ সময় ইচ্ছাকৃতভাবে আবার অহনার গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয় চালক।

গাড়ি থেকে নেমে অহনা প্রতিবাদ করে ট্রাকচালককে নামতে বললে তিনি অহনার সঙ্গে তর্কাতর্কি করেন। এ সময় অহনা নিজেই ট্রাকের দরজা দিয়ে উঠে চালককে নামাতে যান। কিন্তু চালক কথা না শুনে অহনাকে দরজায় ঝুলন্ত অবস্থায় ট্রাক ছেড়ে দেন। ট্রাকটি অহনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় নিয়ে উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে পৌঁছালে স্থানীয়দের বাধায় ট্রাকচালক সজোরে ব্রেক করলে ছিটকে পড়ে আহত হন অহনা। অহনা কোমরের হাড়ে ও পিঠে প্রচণ্ড চোট পান। তাকে উদ্ধার করে মিতু হাসপাতালে ভর্তি করান।

ফেসবুকে ওই ঘটনার ভিডিও শুনে কেউ কেউ বলেছেন, অহনা বাজে ব্যবহার করেছে। ভিডিওটা ছিল খন্ডিত। ভিডিওতে যা দেখেছেন সেটা দুর্ঘটনার শুরুর সময় মাত্র। পুরো ঘটনা না জেনে ফেসবুকে মন্তব্য করা কি ঠিক হল?

ঘটনার বিবরণ দিয়ে অহনা বলেন, আমি যদি ওই সময় ট্রাকে না উঠি তাহলে তো ট্রাক আমার উপর দিয়ে উঠে যায়। আমি ট্রাকে সাধে ঝুলিনি। সঙ্গে থাকা মিতু (খালাতো বোন) ভিডিও বন্ধ করে পুলিশকে কল করতে বলি। এমতাবস্থায ট্রাকচালকের চেহারা বদলে গেল। তখন সে বলেছিল, ‘পুলিশ ডাকছে, দেখাচ্ছি।’ এই বলে ট্রাক চালানো শুরু করে।

ওই সময় অহনাকে মেরে ফেলতে সচেষ্ট হন চালক ও চালকের সহযোগী। বিষয়টি জানিয়ে অহনা বলেন, আমি ট্রাকে ঝুলন্ত অবস্থায়, চালকের সহকারী চালককে বলেছিল, এটা নায়িকা! এটাকে যদি বাঁচায় দেন আমরা ফাইসা যাব।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর একজন মন্তব্য করেন- নাটক করে তো এজন্য এ রকম হয়েছে। মরে গেলে ভালো হতো।

এ বিষয়ে অহনা বলেন, আজকে আমার জায়গায় যদি তার (মন্তব্যকারী) মা, বোন ও প্রেমিকা থাকতেন তাহলে কি তিনি এরকম বলতে পারতেন।

যোগ করে আরও বলেন, আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। পাপ-পূণ্যের বিচার আল্লাহ করবেন। বেঁচে থাকলে আমার সঙ্গে একই ঘটনা যদি আবারও ঘটে আমি প্রতিবাদ করব।

অহনাকে আহত করার ঘটনায় ৯ জানুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন অহনার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমীন মিতু। গত রোববার সকালে ঢাকার সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রাকচালক সুমন মিয়া ও তার সহকারী রোহানকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মামলায় গ্রেফতার ট্রাকচালক সুমন মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: